বিশ্বব্যাপী যখন চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি সমানতালে বেড়েই চলেছে প্রাণহানি, কোনোভাবেই লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছিল না এই ভাইরাসের; ঠিক তখনই একের পর এক দেশ মহামারি এই ভাইরাস মোকাবিলায় অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন।
সর্বশেষ শুক্রবার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চলতি বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত এক কোটি ৫৮ লাখ ৩৪ হাজার ৯৬৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট ২ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
ভ্যাকসিন অনুমোদনের বিষয়টি এমন ব্যক্তি নিশ্চিত করেছেন যিনি এই অনুমোদন কাজের সাথে জড়িত। তবে নিজের নামটি গোপন রাখতে চেয়েছেন তিনি।
খাদ্য ও ওষুধ কর্তৃপক্ষের (এফডিএ) অনুমোদন পাওয়া ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকা খুব শিগগিরই স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সিং হোমে থাকা রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করা হবে।
টিকা অনুমোদনে এফডিএ-র সিদ্ধান্ত ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা চালানোর পরই এসেসে। এছাড়া এর পেছনে ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈকি চাপও ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন এই সংস্থাকে খুবই ধীর বলে অভিযোগ করেন এবং শুক্রবারের মধ্যে টিকার অনুমোদন না দেয়া হলে এফডিএ প্রধান স্টিফেন হানকে সরিয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়।
এই পদক্ষেপটি মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি, তবে এটির বৈশ্বিক প্রভাবও রয়েছে কারণ যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত অনেক দেশের কাছে রোল মডেল মনে হতে পারে এবং তারাও ভ্যাকসিন নেয়ার কার্যক্রম শুরু করতে পারে।
ফাইজার ও বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ছাড়াও মর্ডানার ভ্যাকসিন অনুমোদনের বিষয়টিও ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী সপ্তাহেই এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়া হতে পারে। এছাড়া জানুয়ারির শুরুর দিকে জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনও বাজারে আসতে পারে। এটা বর্তমানে চূড়ান্ত ট্রায়ালে আছে।
ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তার দেয়া তথ্যমতে, ফাইজার-বায়োএনটেকের ৩ মিলিয়ন টিকা প্রথম ধাপে দেশব্যাপী দেয়া হবে। একই পরিমান টিকা দ্বিতীয় ধাপে প্রয়োগের জন্য রিজার্ভ করে রাখা হবে।
এর আগে যুক্তরাজ্য, বাহরাইন ও কানাডা ফাইজারের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।