এখন থেকে ঢাকায় থাকবে ফেসবুকের প্রতিনিধি

20

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুক’ এক বৈঠকে বাংলাদেশে তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে কর দিতে প্রতিনিধি নিয়োগের পাশাপাশি বাংলা ভাষার সঠিক অনুবাদ ও প্রয়োগে প্রয়োজনীয় সকল সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ফেসবুকের উচ্চ পর্যায়ের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিটিআরসি মিলনায়তনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে বৈঠককালে এমন প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

এর আগে ২০১৮ সালে ও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্পেনের বার্সেলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসের সাইডলাইনে ফেসবুকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে মন্ত্রীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পুনরায় সোমবার প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওই সংবদ বিজ্ঞপ্তিতে ফেসবুক বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মেনে চলার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে বলেও জানানো হয়। একই সঙ্গে বাংলা ভাষা প্রয়োগে মন্ত্রীসহ বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা কামনা করেছে ফেসবুক।

জবাবে মন্ত্রী বিশেষজ্ঞ ও কারিগরিসহ প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

বৈঠকে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশে বিরাজমান নৈরাজ্য পর্নোগ্রাফি, সন্ত্রাস, গুজব রটানো, প্রশ্নপত্র ফাঁস, অপপ্রচার, সামাজিক নিরাপত্তা ও বিদ্যমান বিভিন্ন বিষয়ে ফেসবুককে বাংলাদেশের নিয়মনীতি মেনে নিরাপদ ফেসবুক ব্যবহারে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ, আমাদের সমাজ ও আমাদের নাগরিকদের ফেসবুকের নিরাপদ ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে।’

বাংলাদেশের আইন, আবহমান বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং নিয়মনীতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আইন আছে, সেই আইন অনুযায়ী ফেসবুককে কনটেন্টসহ অন্যান্য বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।’ জবাবে, ফেসবুক বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আশ্বাস দেন।

এ সময় কনটেন্ট বিষয়ে বিদ্যমান যে কোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য বাংলাদেশে অফিস খোলার তাগিদ দিয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘রেসপন্স টাইমের বিষয়ে ফেসবুক যে দীর্ঘসূত্রতা করে, সেটিকে ইমিডিয়েট রেসপন্স টাইমে আনতে হবে।’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার ছাড়াও বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, বিটিসিএল মহাপরিচালক ইকবাল মাহমুদ, টেলিকম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মহসিনুল আলম, আইসিটি বিভাগের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক তারেক এম বরকত উল্লাহ, সাইবার থ্রেট ডিটেকশন প্রকল্পের পরিচালক মো. রফিকুল মতিনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ জনপ্রতিনিধিরা।

বৈঠকে আট সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ফেসবুকের হেড অব সেফটি বিক্রম সেনগ। এছাড়া আট সদস্য বিশিষ্ট ওই প্রতিনিধি দলটিতে ছিলেন, ফেসবুকের পাবলিক পলিসি বিষয়ক পরিচালক অশ্বনি রানা, শিবনাথ থাকরাল, পাবলিক পলিসি ম্যানেজার বরুণ রেড্ডি ও সুমন্ত বিশ্বাস, প্রডাক্ট লেভেল ট্রান্সলেটর টবি ফারনাল, পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিসাব দারা, স্ট্র্যাটেজি ম্যানেজার ম্যাট স্যানসেন এবং ফেসবুক মোবাইল পার্টনার বিভাগের ইরম ইকবাল।