এই সরকারকে দ্রুত বিদায় জানাতে না পারলে এদেশের মানুষ ও গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না

16

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারকে বিদায় জানানোর সময় এসে গেছে। এই সরকারকে দ্রুত বিদায় করতে না পারলে এদেশের মানুষ শান্তি পাবে না। গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। আমরা ৩০ ডিসেম্বর গনতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করছি। এ সরকার স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমরা আজকে এখানে সমবেত হয়েছি দেশনেত্রীর জন্য।
দেশনেত্রী কে? সারা দেশের মানুষ আজ এত উত্তাল কেন?

তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌর শহরের সাধারণ পাঠাগার চত্বরে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে এক সমাবেশে উপরোক্ত কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে। সেখানে আমাদের মূল নেতাদের প্রিজাইডিং অফিসার দিয়ে জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বেগম খালেজা জিয়া অবশ্যই একজন মুক্তিযোদ্ধা। কারন যুদ্ধ শুরুর সময় তিনি ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে না গিয়ে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কাছে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাহলে খালেদা জিয়া যদি মুক্তিযোদ্ধা না হয়, তাহলে ওই সময়ে যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করেছিলেন তারা কি মুক্তিযোদ্ধা হবেন? বেগম খালেদা জিয়া অবশ্যই একজন নারী মুক্তিযোদ্ধা।

৮১ সালে যখন সকলে ভেবেছিল বিএনপি শেষ, গণতন্ত্র শেষ, জেনারেল জিয়ার আর কোন দল থাকবে না, তখন মেজর জিয়া স্বাধীনতার পতাকা হাতে নিয়েছিলেন। গনতন্ত্রের পতাকা হাতে নিয়েছিলেন। তিনি মাঠে ঘাটে, গ্রামে-গঞ্জে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে গেছিলেন।

১৯৭১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা করেছিলেন। ওই সময় সেনারা মেজর জিয়ার নির্দেশনা ছাড়া অস্ত্র সমার্পন করেনি। নির্দেশনার পর অস্ত্র সমার্পন করে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবশ্যই একজন নারী মুক্তিযোদ্ধা। এ কথা আ’লীগের লোকজনের মানতে কষ্ট হয়।

বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি কখনও জোর করে ক্ষমতা দখল করেনি। রাজপথে সংগ্রাম করে এরশাদের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া পরবর্তিতে ক্ষমতায় এসে নারীর ক্ষমতায়নে বেশ কিছু কাজ করেছেন। মেয়েদের পড়াশুনা বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করেছেন। তাদের চাকুরীর ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি গ্রামের উন্নয়নে কাজ করে গেছেন নিরলসভাবে। এখনও তিনি লড়াই সংগ্রাম করেই চলেছেন, এই ফ্যাসিস্ট ও অবৈধ সরকারকে উৎখাতের জন্য।

সরকার তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। বর্তমানে তিনি খুবই অসুস্থ। তিনি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। আমরা বারবার সরকারের কাছে তার অসুস্থতার কথা জানিয়ে লাভ হয়নি, তাই সারাদেশে আন্দোলন শুরু করেছি। বর্তমানে তার মুক্তির দাবিতে সারা দেশে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় দাড়িয়েছে এটাও একটি শক্তিশালী আন্দোলন।

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধারা কি একটি ব্যক্তিকে ক্ষমতায় রাখতে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল? না। এর আগে ৭৫ সালেও একবার এই ফ্যাসিস্ট সরকার এভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরন করে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে বাতিল করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার চেষ্টা করেছিল। বর্তমান সরকারও ওই রাস্তায় হাটছে। বর্তমানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরন করতে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে নতুন আইন প্রনয়ন করেছে। যার নাম তথ্য প্রযুক্তি আইন। এই আইনের মাধ্যমেই মানুষের কথা বলার অধিকার হরন করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে পুলিশ বাহিনী ও র‌্যাবের প্রধানদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এমনকি র‌্যাব বাহিনীকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় এটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য খুবই লজ্জার। এভাবে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে ধ্বংশ করা হয়েছে।

সমাবেশে জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান মাসুদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ সভাপতি মোস্তাদির হোসেন তরু, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের সিনিয়র সহ সভাপতি গোলাম সারোয়ার, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ সভাপতি জামাল উদ্দিন খান মিলন, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সহ সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরী অর্থ সম্পাদক মো: শরিফুল ইসলাম শরিফসহ বিএনপির বিভিন্ন সহযোগি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।