ইসি গঠনে আইনী প্রক্রিয়া ‘যেই লাউ সেই কদু’: বিএনপি

13

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে চলমান আইনী প্রক্রিয়াকে সরকারের অনুগত ও অপদার্থ নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া মন্তব্য করে বিএনপি বলছেন, দলীয় স্বার্থে আইনী রূপ দেয়ার সরকারী অপপ্রয়াসের ফলাফল হবে- ‘যেই লাউ, সেই কদু’। এবার সম্ভবত: হতে যাচ্ছে একটি পচা কদু।

সোমবার দিবাগত রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি নেতারা জানান, বিনা ভোটে অনির্বাচিত একটি অবৈধ সরকারের নিকট থেকে জনগণ এর চেয়ে বেশী কিছু প্রত্যাশা করে না। একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের নৈতিক যোগ্যতা ও সামর্থ্য আছে শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের।

সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা ও পর্যালোচনা শেষে যেসব প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তা হলো-

ক) গত প্রায় ১ যুগ ধরে আমাদের দলের যে সব নেতা-কর্মী গুম ও খুন হয়েছেন, তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছেন মর্মে নিখোঁজ ও মৃত নেতা-কর্মীদের নিকটাত্মীয়দের নিকট থেকে স্বীকারোক্তি লিখে নেয়ার সরকারী নির্মম অপপ্রয়সে সভ্যতা, মানবতা এবং ন্যায় বিচারের সকল মর্মবাণী ও মূল্যবোধকে অগ্রাহ্য এবং রাষ্ট্র ক্ষমতার অপপ্রয়োগের এক নতুন কলংকময় দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে। বিএনপি এই ঘৃণ্য ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলছে যে, এমন ঘৃণ্য অপচেষ্টা সরকারের আত্মরক্ষার হাতিয়ার নয় বরং তার দানবিক পরিচয় স্পষ্টতর করেছে। সভায় সরকারের এসব অমানবিক কর্মকান্ড ও নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য নাগরিক হিসাবে সুবিচার প্রত্যাশী গুম, খুনের নির্মম শিকারদের পরিবারের সদস্যদের উপর অনৈতিক চাপ প্রয়োগ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ তীব্রতর করার লক্ষ্যে চলমান কর্মসূচি অব্যহত রাখার জন্য সারা দেশে দল ও অঙ্গদলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

খ) দেশের ব্যাংক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহে চলমান অনিয়ম, দূর্নীতি, লুটপাট এবং এসব প্রতিরোধের প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়ক ভূমিকা পালনের একাধিক ঘটনা দেশের অর্থনৈতিক খাতে গচ্ছিত জনগণের সম্পদ মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখিন হওয়ার বিষয়টি সভায় আলোচিত হয় এবং সভায় জাতীয় স্বার্থে এ বিষয়ে তথ্য নির্ভর বাস্তব চিত্র জনগণের সামনে উপস্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গ) সভায় আগামী ২৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার দেশব্যাপী সকল মহানগর ও জেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্রকে জবাই করে একদলীয় অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসন জারীর দিনটিকে “বাকশাল দিবস” হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটি ঐ দিন সারা বিশে^র বিভিন্ন দেশে বসবাসরত দলমত নির্বিশেষে গণতন্ত্রমনা বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে ।

ঘ) সভা মনে করে যে, অনুগত ও অপদার্থ নির্বাচন কমিশন গঠনের চলমান প্রক্রিয়াকে দলীয় স্বার্থে আইনী রূপ দেয়ার সরকারী অপপ্রয়াসের ফলাফল হবে ‘যেই লাউ, সেই কদু’। এবার সম্ভবত: হতে যাচ্ছে একটি পচা কদু।