বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইতিহাস বড় নির্মম, আল্লাহ আল্লাহ তা’য়ালার বিচার বড় নির্মম। আল্লাহ তা’য়ালা চোখের সামনে দেখে দিল যে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার ও নৈরাজ্য ঠেকাতে’ এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। দুদিনের অবস্থান কর্মসূচির আজ শেষ দিন ছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, খুনি শেখ হাসিনা ১৫ বছর ধরে আমাদের নেতাকর্মীদের স্টিম রোলার চালিয়েছে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অমানবিক নির্যাতন করেছে। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। শত শত নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। ২৪ সালের নির্বাচনের আগে ২৮ হাজার নেতাকর্মীকে মাত্র দুদিনে কারাগারে নিয়েছিল। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এতো প্রাণ দিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা যা ইতিহাসে বিরল। অনেক মা তার ছেলে হারিয়েছে, বোন তার ভাই হারিয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আবু সাইদ টিউশনি করে লেখা পড়া চালিয়েছে। গরীব ঘরের সন্তান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটা আবার নতুন খেলা শুরু হয়েছে সংখ্যালঘু, কিন্তু এদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়। তারা আবার ষড়যন্ত্র করছে, কিছু একটা করে ভারতের সহায়তায় ফিরে আসতে চায়। এদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে।’
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের কথা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, এদেরকে বিচার করতে হবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিরোধী ট্রাইব্যুনালে। অপরাধ করেছেন গণহত্যা চালিয়েছেন। যারা লুণ্ঠন করেছেন নির্যাতন করেছেন, হত্যা করেছেন তাদের বিচার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল, এ সরকারকে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করতে হবে। যতদিন তারা গণতন্ত্রের পক্ষে থাকবে। অবশ্যই বর্তমান সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী কর্মকর্তা হয়েও যারা স্বৈরাচার সরকারের দোসর হয়ে কাজ করেছিলেন তাদেরকে বের করতে হবে, যারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী এই সরকারের হয়ে সরকারে বসে থেকে কাজ করেছেন তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, নগদ একটি বাটপারি প্রতিষ্ঠান। এদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। পোস্ট অফিসের সাথে নগদের কোন সম্পর্ক নেই। মানুষকে স্নাইপার দিয়ে হত্যা পেছনে এদের প্রতিটি ব্যবসায়ী জড়িত। এরা টাকার কুমির হয়েছে। সব পাচার করেছে। এদেরকে ধরুন। হাসিনা সালমান রহমানকে প্লেনে নেয়নি। আমাদের নেত্রীকে আটক করা হয়েছিল আমাদের কেউ পালিয়ে যায়নি। এটাই হলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতানেত্রীদের মধ্যে পার্থক্য। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের চাওয়া ছিল দেশনেত্রী মুক্ত হাওয়া দেখতে চেয়েছিলাম। এখন দেখতে পাচ্ছি, আর চাওয়া পাওয়া কিছু নেই। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে করে বলেন, আন্দোলন কিন্তু শেষ হয়নি, সতর্ক থাকুন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, এক বুক রক্ত দিয়ে ছাত্র-জনতা যে স্বাধীনতা এনেছে। মায়ের বুক খালি হয়েছে, শহীদ হয়েছেন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্র এখনো থামেননি। ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করার দুঃসাহস দেখাবেন না। এ দেশের ছাত্র-জনতা খেলা দেখিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের নিষ্পেষিত নির্যাতন করেছে, ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আর এই দেশে তাদের আসতে দিবে না।
বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান ড আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, কৃষক দলের সাধারণ শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত