ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কৃষি কর্মকর্তার পরকীয়া: বিচ্ছেদ ঘটালেন স্বামী

238

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ ওঠা সেই কৃষি কর্মকর্তার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটালেন স্কুল শিক্ষক স্বামী শহীদুল। আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন তিনি। রংপুর জেলা নোটারীর পাবলিক কার্যালয়ে এভিডেভিডে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে স্ত্রীর পরকীয়াকে দায়ি করেছেন তিনি।

মামলা ও এফিডেভিট সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া (৩৮) ও স্কুল শিক্ষক শহিদুলের। তাদের সংসারে তিন সন্তানও রয়েছে।এর মধ্যে ২০১২ সালে গয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শরীফ ইবনে ফয়সাল মুনের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে সুলতানা রাজিয়া। শহিদুল তাদের পরকীয়া হাতে নাতে ধরে ফেলে। পরবর্তীতে সুলতানা রাজিয়া ভুল স্বীকার করে এবং শহিদুল মেনে নিয়ে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সংসার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সুলতানা রাজিয়া ও গয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন পুনরায় পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পরে। এ ব্যাপার সুলতানার পরিবারের সাথে কথা বলেও তাকে সংশোধন করাতে পারেননি শহিদুল। এমতাবস্থায় সুলতানার সাথে সংসার করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে (২৭ মার্চ ২০২৪) ১,২ ও ৩ তালাক দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন স্কুল শিক্ষক শহিদুল।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম জানান, ২০১২ সাল তারা প্রথম কথাবার্তা প্রথম শুরু করে। পর্যায়ক্রমে আমার স্ত্রীকে মুন চেয়ারম্যান বিভিন্ন লোভ লালসা দেখাতো। শুটিবাড়ীর সিনেমা হল, রংপুরের বাসাবাড়ী ও তার একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস লিখে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। মূলত একটা মেয়ে মানুষকে নিজের আয়ত্ত্বে আনতে যা যা বলা দরকার তাই বলে মুন চেয়ারম্যান। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী ও মুন পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। এরপর থেকে তাকে আমি আমার নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারিনা। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে প্রায়ই আমাদের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। পারিবারিক আদালতে মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করতেছে। আমি একজন স্বামী হিসেবে অসহায়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্যারকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানোর জন্য আমাকে মিথ্যা মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রাইভেটকারের ভিতরে কালো চাদরে ঢাকা ছিল মুন চেয়ারম্যান সেই গাড়ীতে জোরজবরদস্তি করে তুলতে চাপ প্রয়োগ করে পুলিশ ভয়ভীতি দেখিয়ে মোবাইলের পাসওয়ার্ড নেয়। পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় আমার ফেইসবুকে মুন ও সুলতানা রাজিয়ার পরকীয়ার কিছু পোষ্ট ডিলেট করে এক পুলিশ সদস্য। আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করিছে মুন চেয়ারম্যান। বর্তমানে আমার ফেসবুক আইডিও আমার নিয়ন্ত্রনে নেই। এতো কিছুর পরেও স্ত্রী, সন্তান ও সংসারের কথা ভেবে মীমাংসা করে সংসার করতে আগ্রহী ছিলাম। মীমাংসার পরেও আমার স্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করে মুন। আমার স্ত্রীর সাথে মুনের পরকীয়া ঠেকাতে না পেরে আদালতে মামলা দেই এবং সুলতানা রাজিয়ার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করি।

ডিমলা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া জানান, মুনের সাথে কখনোই কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিলো না। তবে আমার স্বামীর সাথে রাগ করে ফোনে উনার (শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন) সাথে যতোটুকু কথা হয়েছিল। বাস্তবে এর কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যাবে না। অবৈধ কর্মকাণ্ড করছে আমার স্বামী আর কলঙ্ক দিচ্ছে আমাকে।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস.এম. আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উর্ধ্বতন আরেক কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ হলে তিনি বলেন, সামাজিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ প্রমানিত হলে তা বিভাগীয় তদন্ত সম্পন্ন পূর্বক শাস্তির বিধান আইনে রয়েছে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাব কোনরূপ আইনের ব্যতয় ঘটাতে সক্ষম নয়।