ইউএনও’র নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলছেন ইউপি চেয়ারম্যান

23

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক: পটুয়াখালীর বাউফলে ইউএনও’র নাম ভাঙিয়ে খাল থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম মো. কামাল হোসেন বিশ্বাস। তিনি নওমালা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তবে বিষয়টি জানেন না দাবি করে ইউএনও জানান,‘ অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজলোর সদর ইউনিয়নের জৌতা-নওমালা খালে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এলজিইডির পাকা সড়ক নির্মাণ কাজে ওই বালু ব্যবহার করছেন সাব ঠিকাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান কামাল বিশ্বাস।

উপজেলা এলজিইডি সূত্র জানায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জৌতা গ্রামের আলেহা রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে নওমালা ইউনিয়নের নগরের হাট পর্যন্ত ৭০০ মিটার পাকা সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেন এলজিইডি। প্রায় ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে মেসার্স তালুকদার এন্টার প্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে এলজিইডি। কাজের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শুরু করেনি ঠিকাদার জাফর তালুকদার। সম্প্রতি সাব ঠিকাদার হিসেবে নওমালা ইউপি চেয়ারম্যান কামাল বিশ্বাস সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কে বালু ভরাটের কাজ চলছে। সড়কের অদুরে জৌতা- নওমালা খালে শ্যালোমেশিন বা বোমা ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করছেন একাধিক শ্রমিক। গণমাধ্যমের উপস্থিতি টের পেয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেন শ্রমিকেরা। অবৈধ বালু তোলার কাজ পরিচালনা করছেন ড্রেজার মালিক বায়জিদ মোল্লা।

তিনি জানান, ‘সড়ক নির্মাণ কাজের জন্য চেয়ারম্যান কামাল বিশ্বাস বালু উত্তোলন করছেন। সড়কের কাজে প্রায় ৩৩ হাজার ঘনফুট বালু লাগবে। প্রতি ঘনফুট ৮ টাকা ধরে তার সাথে চুক্তি হয়েছে। যার মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা। ড্রেজার মালিক আরও জানান, ‘বালু উত্তোলনের বিষয়টি ইউএনও অবগত আছেন।’

মাটির তলদেশ থেকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালু তোলায় হুমকি পড়েছেন খালের পাশের ফসলি জমি ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। স্থানীয়রা বালু উত্তোলনে বাধা দিলেও বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না এ প্রভাবশালী চেয়ারম্যান।

স্থানীয় বাসিন্দা আলতাফ হোসেন (৫০), সালাম মোল্লা (৪৫)সহ একাধিক বাসিন্দা জানান, খালে ড্রেজার বসিয়ে মাটির তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করায় ফসলি জমি, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বসবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। প্রায় এক বছর আগে পাশের আরেকটি খাল থেকে বালু উত্তোলন করায় ওই এলাকায় অনেক ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে, কোথাও কোথাও জমি নিচে ডেবে গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব ঠিকাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান কামাল বিশ্বাস বলেন, মূল ঠিকাদার কাজ করছেন না। তাই তিনি কাজটি করছেন। বিষয়টি ইউএনও জানেন। তাকে (ইউএনও) জানিয়েই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

উপজেলা এলজিইিডর উপ-সহকারি প্রকৌশলী ও কাজ তদারক কর্মকর্তা মো. আব্বাস বলেন, কাজের জন্য লোকাল বালু দরকার। ঠিকাদার সেটা সরবরাহ করবেন। কোথা থেকে কিভাবে করবেন সেটা আমাদের দেখার বিষয় না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বশির গাজী দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।