ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে যা গুরুত্ব পেলো

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিশেষ করে সংস্কার, আগামী নির্বাচন ও নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে এই আলোচনায়।

রোববার (১২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আমাদের এখানে এসেছিলেন। বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে আলোচনাগুলো হওয়ার কথা সে আলোচনাগুলোই হয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ সবার মনে প্রশ্ন আছে, সেগুলো বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। একটি হলো নির্বাচন, কবে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আমাদের ভাবনা কী? আরেকটা হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি, যেহেতু বাংলাদেশের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতিকঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সংস্কার বিষয়ে যে আলোচনা হচ্ছে সে বিষয়ে আমাদের ভাবনা কী, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মূলত নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা যেটা সব সময় বলে আসছি, এ বছরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। অন্য কোনো ভাবনার দিকে না গিয়ে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনের দিকে গিয়ে আগামী দিনে দেশে একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা।

খসরু বলেন, অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দেশ বেশি দিন চলতে পারে না। সুতরাং অগতান্ত্রিক সরকারের জনগণের সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকে না। কোনো ফিডব্যাক পাওয়া যায় না। সুতরাং একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যত তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়া সম্ভব সেদিকে আমরা জোর দিয়েছি। সংস্কারের বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে, যে কয়টি বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে যেতে পারব সেগুলো করা যেতে পারে। সেগুলোর জন্য সময় নেওয়ার কারণ নেই। আর যেগুলো ঐকমত্য হবে না, সেগুলো আগামী দিনের নির্বাচনে প্রত্যেকটা দল জনগণের কাছে নিয়ে যাবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামী সংসদে তারা সেগুলো পেশ করা হবে। সংসদে আলোচনা হবে, তর্ক হবে, বিতর্ক হবে, পরে পাস করা হবে।

আমির খসরু বলেন, অর্থনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে, যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তা অব্যাহত থাকবে কি না? বিএনপির অর্থনৈতিক সফলতা সম্বন্ধে আমরা বলেছি। আগামী দিনে অর্থনীতিকে তুলে আনার যে প্রোগ্রাম বিএনপি দিয়েছে এবং এ সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো অর্থনৈতিক প্রোগ্রাম দেওয়া হয়, সেটা বিএনপির সমর্থন করবে। বাংলাদেশের স্বার্থে সে কাজে অব্যাহত থাকবে। আমাদের নিজস্ব প্রোগ্রাম আছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, সেগুলো আগামী দিনে জনগণ যদি নির্বাচিত করে তাহলে অবশ্যই করব।

বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন- দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটি সদস্য ডক্টর আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটি সদস্য শামা ওবায়েদ।