আসাদুজ্জামান খান বাংলাদেশের কসাই: প্রেস সচিব

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ‘বাংলাদেশের কসাই’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রোববার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশে জুলাই-অগাস্টে ঘটে যাওয়া আন্দোলন, সে সময় তার এবং তৎকালীন সরকারের অবস্থানসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।

ওই সাক্ষাৎকারে কামাল দাবি করেন, বাংলাদেশে যৌথ অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছে, ইসলামী উগ্রবাদ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভ্যুত্থান। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রেস সচিব বলেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল হচ্ছেন বাংলাদেশের কসাই। দেশে যে ছোট ছোট বাচ্চা ছেলে-মেয়ে, শিক্ষার্থী, শ্রমিক, রিকশাওয়ালাদের নির্দয়ভাবে খুন করা হয়েছে, তার অন্যতম কসাই হচ্ছেন উনি। তাকে যারা প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে, নিউজ যারা করছে, তাদের মানটা বোঝেন। এটা আন্তর্জাতিক প্রোপাগান্ডার অংশ। পৃথিবীর কেউ কোনো কসাইকে প্ল্যাটফর্ম দেয় না।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সুইজারল্যান্ড সফরের সার্বিক বিষয় জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনে আসেন শফিকুল আলম। গুজবের বিষয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যদি এটা আইনের ব্যত্যয় হয় তাহলে আইনি ব্যবস্থার বিষয় আছে। ব্যবসায়ীদের নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ দিয়েছি। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের সঠিক পরিবেশ দিতে পারছি কি না, সেটা তাদের বড় কনসার্ন হওয়া উচিত।

প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা পালিয়েছেন বলে যে গুজব রটেছে, সে বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, যারা পালিয়েছেন তারাই ছড়াচ্ছে। শেখ হাসিনা পালায় না বলে উনি পালালেন। ওনার চ্যালা-চামুন্ডারা এগুলো করছেন। প্রতিবার উনি (প্রধান উপদেষ্টার বিদেশ সফর) আসলে এটা বলেন। এটা বলে যদি উনারা মনে মনে সুখ পান, তা পেতে দেন।

দেশে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারখানা খুলবে, বন্ধ হবে এটা প্রাকৃতিক নিয়ম। কিন্তু সরকার দেখে রপ্তানি বাড়ছে কি না। দেশের রপ্তানি সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ৭ শতাংশ, অক্টোবরে ১৬ বা ১৮ শতাংশ, নভেম্বরে ২২ শতাংশ, ডিসেম্বরের ১৮ শতাংশের মত। আমাদের প্রবৃদ্ধি সেই রকম আছে। রপ্তানি বৃদ্ধি মানেই হচ্ছে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হওয়া।

বন্ধ হওয়া কারখানার মালিকদের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের বেশিরভাগ মালিক পালিয়ে গেছেন। পুরো দায়টা আমাদেরও উপর দিয়ে গেছেন। ব্যাংক থেকে যা যা ছিল তা চুরি করে পালিয়ে গিয়ে বেতন না দিয়ে মজা দেখতেছেন। ভাঙচুর করা হচ্ছে দুই-তিনটা কারখানা মিলেই। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান খুবই সামান্য। একদমই কিছুই না।
সুইজারল্যান্ডে অনেকগুলো বৈঠকের মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

কবে নাগাদ অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, বৈশ্বিকভাবে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনা খুবই ধীরগতির (স্লো) প্রক্রিয়া। এটা নিয়ে যত দ্রুত মুভ নেওয়া দরকার, তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করেছে। যে টাকা চুরি হয়েছে তা দেশের খেটে খাওয়া মানুষের টাকা, সেটা চুরি করে নিয়েছে শেখ হাসিনার চোরতন্ত্রের লোকজন। এটা যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনব। এটার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রয়োজন, তা সবাই দিচ্ছে। টাকা ফিরিয়ে আনা আমাদের টপ প্রায়োরিটি। প্রধান উপদেষ্টা যাদের সঙ্গেই বৈঠক করছেন, সেখানে বিষয়টি তুলছেন।