আমেরিকার নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার বুধবার (১ ডিসেম্বর) জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ।
জানা গেছে, এবারের ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘জাওয়াদ’। সৌদি আরবের দেওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ের অর্থ উদার বা মহান।
বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৯৮ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে। থাইল্যান্ডের ফুকেট শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রে অবস্থান করছে।
সমুদ্রের যে স্থানে অবস্থান করছে সেই স্থানের পানির তাপমাত্রা ২৯ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (সাড়ে ২৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি পানির তাপমাত্রা থাকলে তা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য আদর্শ পরিবেশ হিসেবে গণ্য করা হয়)। ওই স্থানের বায়ুর গতিবেগও আদর্শ অবস্থায় রয়েছে।
কানাডার সাসকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক বাংলাদেশি পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের মাঝা-মাঝি স্থানের উপকূলে পৌঁছার পরে উত্তর-পূর্ব দিকে ঘুরে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে যাত্রা করতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কার কথাই বলছে আমেরিকার নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার।
এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সংকট মোকাবিলা কমিটি। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে রাজ্য প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে বুধবার ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবার নেতৃত্বে এ বৈঠক হয়।
আলোচনায় কেন্দ্রীয় মৌসুম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল জানান, একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগর ঘেঁষে। ৩ ডিসেম্বর এটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেবে। ঝড়টি অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করবে ৪ ডিসেম্বর। তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার।
তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সময় ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ের আভাস রয়েছে। উড়িষ্যা ও অন্ধ্র উপকূলে এ প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেবে। ঘূর্ণিঝড় মূলত প্রভাব ফেলবে শ্রীকাকুলাম, বিশাখাপত্তম ও বিজয়নগরমে। এ ছাড়া এর প্রভাব পড়বে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ ও আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মুখ্যসচিব ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। ক্ষয়ক্ষতির আভাস রয়েছে, এমন সব রাজ্যে আপাতত ৩২টি দল পাঠিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। প্রয়োজনে আরও অতিরিক্ত দল পাঠাতে হতে পারে। প্রস্তুত রাখা হচ্ছে নৌবাহিনীকেও।
আলোচনায় ক্যাবিনেট সেক্রেটারির পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়াতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সম্ভাব্য গতিপথ সংলগ্ন এলাকা থেকে জনসাধারণকে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। জেলেরা যাতে এ সময়ে কোনোভাবে সমুদ্রে না যান, সে বিষয়েও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত