বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আ’লীগ এখন একদলীয় শাসনের সঙ্গে এক ব্যক্তির শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা আন্তর্জাতিক ভাবে আওয়ামীলীগ এখন সৈরাতন্ত্র কায়েম করছেন। পত্র পত্রিকা ও বিভিন্ন দেশ আওয়ামীলীগকে এবং এ সরকারকে সৈরাচারী দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তার প্রমাণ আমরা পাচ্ছি যুক্তরাষ্ট্রের সেংসন সুনির্দিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠানের উপরে। তিনি গতকাল মঙ্গলবার হাজীপাড়াস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে উপরোক্ত কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে মানবাধিকার রিপোর্ট সেখানে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মানবাধিকর লঙ্ঘনের যে প্রতিবেদন আসছে। তাতে করে এটা আন্তর্জাতিক ভাবে প্রয়োজন নাই প্রমাণ করার। এটা আন্তর্জাতিক বিশে^ প্রমানিত হয়ে গেছে। দেশের মানুষ নিজেরাই টের পাচ্ছে তাঁরা এখন সম্পুর্ণ একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের কাছে রয়েছে। সুতরাং এটা নতুন করে রাষ্ট্রদূতদের ডেকে কথা বলার মত না। আমরা কখনোই কোন রাষ্ট্রদূতকে ডাকি না। রাষ্ট্রদূতরা আমাদের অফিসে এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। এটি নিয়মিত ভাবে আগে যেমন করছেন এখনও তেমনই করছেন। সেখানে বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করার কিছুই নাই। আপনাদের পত্র পত্রিকায় যেসব খবর প্রকাশিত হয় সে গুলো যতেষ্ট প্রমাণ যে বাংলাদেশের এখন কি অবস্থা চলছে। দু:খ জনক ব্যাপার আওয়ামীলীগ সরকার পুরোপুরিভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে আমলাদের উপরে আইন শৃংখলা বাহিনীর উপরে। কারণ জনগণ থেকে তারা সম্পুর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন মূলত সম্পুর্ণ সামরিক বেসমারিক আমলাতন্ত্রের উপরেই নির্ভরশীলতা হয়ে পড়েছে। যার ফলে তাঁরা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন আমাদের কাছে হাস্যকর মনে হয় এবং জনগণের কাছেও হাস্যকর মনে হয়। ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়েগেছে ঢাকার কলাবাগানের খেলার মাঠ রাকরতে গিয়ে একজন মহিলা ও তার কিশোর ছেলে প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাদের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রমাণ করে তারা কতটা সৈরাচারি, পাওয়ারফুল। এর মধ্যেও স¤প্রতি কুমিল্লায় ও আরও একটি জায়গাতে তারা দুইজন নাগরিককে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলেছে। কোন রকম ওয়ারেন্ট ছাড়াই এ্যারেস্ট করে নিয়ে যায়। এখানে প্রমাণিত হয় কোন প্রতিষ্ঠানের ওপরে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপরে তাদের কোন নিয়ন্ত্রণ নাই। আজকে সব চেয়ে যে কথাটি বড় হয়ে উঠেছে যে সরকারের প্রশ্রয়ে মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে এবং আইনের শাসন বলতে আর কিছুই নাই। সম্প্রতি নিউমার্কেটের ঘটনা সম্পর্কে ফখরুল বলেন, ঢাকা কলেজের ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছে তার প্রত্যেকটি সংবাদ মাধ্যমে পরিস্কার ভাবে উঠে এসেছে যে, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ গুলোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা সংর্ঘে জড়িত ছিলো তারাও আওয়ামীলীগের অনুসারী। অযথা কাকে নিয়ে গেলো বিএনপির নেতাকে এরেস্ট করে নিয়ে গেলো। তিনদিনের রিমান্ডও দিলো। এই যে একটা পুরোপুরি দলীয়করণ প্রশাসনকে, বিচার বিভাগকে, আইনশৃঙ্খলা রাকারীবাহিনীকে। এ সব ঘটনা নতুন করে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হয়না। প্রতিনিয়ত ঘটছে। গত পরশু আমেরিকান প্রেসিডেন্ড খুব পরিস্কার করে বলে দিয়েছেন সেংসন এত তাড়াতাড়ি উঠবেনা। যদি তারা পরিবর্তন না করে। অথাৎ যাদের বিরুদ্ধে সেংসন দেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। গুম করার যে সংস্কৃতি চালু করেছে সেটাকে যদি বন্ধ না করে এবং মানুষের মানবাধিকার যদি প্রতিষ্ঠিত না হয়। শুধু এটাও না এর পরেও যদি তারা এসব বন্ধ না করে তাহলে আরও বেশি করে তাদের উপর বিভিন্ন ভাবে সেংসন আসতে থাকবে। এটা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয় না। বাংলাদেশের ভ’খন্ডের উপরে সেংসন আসা এটা আমাদের লজ্জার কথা। এটা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয় না। আমরা বার বার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি তোমরা সংবিধান লঙ্ঘন করছো, মানবাধিকার লঙ্ঘন করছো। ১৯৭১ সালের চেতনার কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠে যায়। সে চেতনাকে সম্পুর্ণভাবে ভ’লণ্ঠিত করে দিয়েছো।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেল বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সহ সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠের নেতৃবৃন্দ।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত