আন্দোলনে অংশ নিয়েও আসামী হওয়ার দাবি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে

ববি প্রতিবেদক:

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অপরাধে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের(ববি) ২৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম। তবে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেও মামলার আসামি হবার দাবি করেছেন কেউ কেউ। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়,২৯ জুলাই শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কদের সভায় ছাত্রলীগ পরিচয়ধারীরা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলোপাথারি হামলা করে।এমন ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা শাখা) সানোয়ার পারভেজ লিটন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এজাহারে ১১ নম্বর আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রুম্মান হোসেনের নাম। কিন্তু তাঁর দাবি, সরকারি চাকরিতে বৈষম্য মূলক কোটা পদ্ধতি বাতিলের আন্দোলনে তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন এবং পুলিশি হামলায় আহত হন। তবুও ব্যাক্তি শত্রুতার জেরে তাকে আসামী করা হয়। অন্যদিকে ২০ নম্বর আসামী হিসেবে উল্লেখ করা ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সিতাব খানের দাবি, হামলার ঘটনার সময় তিনি বরিশালেই ছিলেন না।

এ ব্যাপারে রুম্মান হোসেন বলেন, ১৮ই জুলাই পুলিশের সঙ্গে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আমি শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেই এবং পুলিশি হামলায় আহত হই। কিন্তু আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের সঙ্গে ব্যাক্তিগত শত্রুতা থাকায় তারা আমার নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

অন্যদিকে সিতাব খান বলেন, মামলার এজাহারে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে সেসময় আমি বরিশালেই ছিলাম না। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলেই আমি নির্দোষ প্রমাণিত হবো। কিন্তু ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ জোরপূর্বক আমার নামটি মামলায় ঢুকিয়ে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এটিএম রফিকুল ইসলাম বলেন,আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এবং হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের দাবী অনুযায়ী আমরা প্রথমে ২১ জন এবং পরবর্তী তে আবারো তাদের দাবী তেই ৩জনের নাম যুক্ত করে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেই। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে আমরা বলেছি তারা যেন সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনে এবং কেউ নির্দোষ হলে তাকে যেন হয়রানি না করে।

অন্যদিকে বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে নির্দোষ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। তবে এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।