মোমিনুর রহমান:
মানিকগঞ্জের একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা পৌর শিশু পার্কটি সংস্কার আর নজরদারির অভাবে দিনদিন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। একটা সময় শিশুদের উপস্থিতিতে পার্ক চত্বর মুখরিত থাকতো। কিন্তু পরিচর্যার অভাবে পার্কটি জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। এটি এখন পোকামাকড়ের অভয়াশ্রম আর অসামাজিক কার্যকলাপের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে।
শিশুরা এখন, এখানে আসতে ভয় পায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে প্রায় এক একর জমির ওপর এই পার্কটি নির্মাণ করা হয়। পার্কটির উদ্যোক্তা ছিলেন-ওই সময়ের জেলা প্রশাসক মো. আতাউর রহমান। পার্কটি মাত্র কয়েকটি রাইডার দিয়ে শুরু করা হয়েছিল। তিনি মানিকগঞ্জ থেকে বদলী পর মুখ থুবড়ে পড়ে বিনোদন কেন্দ্রটি। দীর্ঘ বিরতির পর পার্কের জৌলুস পূণরায় ফিরিয়ে আনতে ২০১৮ সালে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো.নাজমুছ সাদাত সেলিম ও পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিমের উদ্যোগে পার্কের সংস্কার ও উন্নয়ন কাজে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। এছাড়াও, পার্কের ভিতরে ল্যাট্রিন, ওয়াশরুম ও স্টোররুম নির্মাণ বাবদ বরাদ্দ ছিল প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা। তখন নতুন সাজে সজ্জিত পার্কে স্থান পায়-দোলনা, বাঘ, হরিণ, উট, স্লিপার, ভাল্লুক, হাতি, ডাইনোসর সহ ১৪টি ভাস্কর্য। তখন মানিকগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা পৌর শিশুপার্কের ইলেকট্রিক টেনে চড়তে বিশ টাকার টিকিট লাগতো। কিন্তু এখন আর লাগে না। কারণ ইলেকট্রিক ট্রেন তো দূরের কথা ঝোঁপঝাড়ে পার্কের রাইডারগুলোও নষ্ট ঘুরতে আশা কামিল মাদ্রাসার শিক্ষা শিবিরর্থী রাফি ও তার বন্ধুরা জানান, শিশু পার্কের গেট সবসময় বন্ধ থাকে। গেটের সামনে স্থায়ীভাবে পানি জমে থাকে। এই বদ্ধ পানিতে জন্মাতে পারে এডিস মশার লাভা। যা আমাদের জন্য বিপদজনক। দীর্ঘদিন অযত্ন অবহেলায় বর্তমানে পার্কটি ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। নামে শিশুপার্ক হলেও এখন শিশুদের দেখা পাওয়া যায়না। প্রাপ্তবয়স্ক কিছু নারীপুরুষ অসামাজক কার্যকলাপে লিপ্ত হতে এখানে আসে। অতি দ্রুত পার্কটি সংস্কারের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য পরিবেশ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। পার্কের পাশে অবস্থানরত কয়েকজন স্ট্যাম্প ভেন্ডার নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, পার্কের মধ্যে ঝোপঝাড় হয়ে যাওয়ায় কিছু নারী-পুরুষ অসামাজিক কার্যকলাপ সম্পাদনের জন্য এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয়। অপরদিকে রয়েছে একদল মাদকসেবী। মাঝেমাঝে পুলিশ এসে তাদের ধাওয়া করে। আমরা চাই, সংস্কারের মাধ্যমে শিশুপাকের্র সুন্দর পরিবেশ ফিরে আসুক।