ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের শাল্লার ঝুমন দাশকে এক বছরের জন্য জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান। গত ২১ সেপ্টেম্বর জামিনের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার আদেশের দিন ধার্য ছিল।
গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শানে রিসালাত সম্মেলন নামের একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন। ওই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন দিরাইয়ের পাশের উপজেলা শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাশ। তিনি স্ট্যাটাসে মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন। তবে এ সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় অপপ্রচার চালাতে থাকে মামুনুলের অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
কিন্তু পরদিন কয়েক হাজার লোক লাঠিসোটা নিয়ে মিছিল করে গ্রামের মানুষদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ঝুমন দাশের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামের প্রায় ৯০টি বাড়ি ও মন্দিরে ভাঙচুর-লুটপাট করে। এরপর গত ২২ মার্চ ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। এই মামলায় কয়েক দফায় জামিন আবেদন খারিজের পর ঝুমন দাশের পরিবার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করে। সেই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট ঝুমন দাশকে জামিন দেন।