সাদপন্থিরা তাবলিগি নয়, তারা সন্ত্রাসী চরমপন্থি বাহিনী বলে জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের নেতা মুফতী কেফায়তুল্লাহ আজহারী (উত্তরা)।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কাকরাইল মসজিদে ‘সাদপন্থিদের টঙ্গী ময়দানের নৃশংস হামলা ও তাবলিগের চলমান সমস্যা’ ইস্যুতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমার টঙ্গীর মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের দায় দায়িত্ব বিগত বছরগুলোতে শুরাই নিজামের উপর পরিপূর্ণরূপে ন্যস্ত ছিল। কিন্তু বড় পরিতাপের বিষয় যে, গত ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার গভীর রাতে টঙ্গী এজতেমার মাঠে আসন্ন বিশ্ব ইজতেমার জন্য মাঠ প্রস্তুতি ও মাঠের পাহারার দায়িত্বে নিয়োজিত তাবলিগ জামাতের সাথী ও মাঠে অবস্থিত মাদরাসার কোমলমতি শিশু এবং তাদের শিক্ষকদের উপর বিনা কারণে সাদপন্থিরা বর্বরোচিত ও পৈশাচিক হামলা চালায়। রামদা, কিরিচ, ছুরি, লোহার রডের মতো ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘুমন্ত ও নামাজরত নিরীহ-নিরস্ত্র তাবলিগ জামাতের সাথীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ইতিহাসের এ বর্বরোচিত হামলায় নেজামের তিনজন সাথী নিহত এবং শত শত সাথী মারাত্মকভাবে আহত হন। সাদপন্থিরা এতটাই হিংস্র হয়ে উঠে যে, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসারত আহতদের ওপরও হামলা চালাতে দ্বিধাবোধ করেননি।
ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ : সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের জামিন আবেদন
ইজতেমায় সাদপন্থিদের হামলার নিন্দা ও বিচার দাবি
তাবলিগের সাদপন্থি নেতা মুয়াজ বিন নূরের ছাত্রত্ব ও সনদ বাতিল
তিনি আরও বলেন, সাদপন্থিরা একই কায়দায় গত ২০১৮ সালের পহেলা ডিসেম্বরেও একতরফা আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ৫ হাজারের মতো তাবলিগ জামাতের সাথী ও ছাত্র শিক্ষকদেরকে রক্তাক্ত করেন । এতেই প্রমাণিত হয় যে, সাদপন্থিরা তাবলিগী নয় বরং তারা সন্ত্রাসী চরমপন্থি বাহিনী। যারা গত ১৭ তারিখ দিবাগত রাতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল । তাদের মূল হোতাসহ অনেকের নামে মামলা হয়েছে। কিন্তু আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
দুঃখের সঙ্গে আরো বলতে হয় যে, ১৭ তারিখের কাল রাতে টঙ্গির মাঠের দায়িত্বে থাকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল । অবস্থার দৃষ্টে মনে হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ও তাদের দোসররা যোগসাজশ করে সাদপন্থিদের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি নীল নকশা করেছিলো । তাদের এ নীল নকশা বাস্তবায়নে পার্শ্ববর্তী একটি দেশ ও ইসরাইলের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে বলে কিছু জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে ।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে তিনটি দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো:
১. বারবার আক্রমণকারী এ সন্ত্রাসী সাদপন্থীদের সব কার্যক্রম রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
২. ১৭ ডিসেম্বর গভীর রাতের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০১৮ সালের পহেলা ডিসেম্বর হামলার সঙ্গে জড়িত আসামীদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৩. কাকরাইল মারকাজ ও টঙ্গী ইজতেমার মাঠসহ তাবলিগের সব কার্যক্রম শুরাই নিজামের অধীনে পরিচিত হওয়ার নিশ্চিত করতে হবে।