সব ছাত্র ফেল: মাদ্রাসার সুপার বলছেন ‘তকদির খারাপ’

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক
এবছরের দাখিল পরীক্ষায় বাউফলের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নেওয়া ২৯ জন পরীক্ষার্থীর সবাই ফেল করেছেন। প্রকাশ হওয়া ফলে এমন চিত্র দেখা যায়। কেউ পাশ না করা তিনটি মাদ্রাসার মধ্যে একটি উপজেলার উত্তর দাশপাড়া দাখিল মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসা থেকে ১৫ জন দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের একজনও পাশ করতে পারেনি। অথচ তাদের পড়ানোর জন্য শিক্ষক ছিল ১১জন।

সব ছাত্র ফেল করার কারণ জানতে চাইলে মাদ্রাসার সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘তকদির খারাপ। তাই সবাই ফেল করেছেন। এমন রেজাল্ট হওয়ার কথা নয়।’
অভিভাবকেরা বলছেন, ‘মাদ্রসায় ভারপ্রাপ্ত সুপার পদ নিয়ে দুই শিক্ষকের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। তাদের মধ্যে হাতাহাতি, মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। যার কারণে মাদ্রাসায় শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। শিক্ষকেরা নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন না। আসলেও ঠিক মত পাঠদান না করিয়ে অফিস কক্ষে বসে থাকেন। যার কারণে গত কয়েক বছর ধরেই ফলাফল খারাপ হচ্ছে। এবার কেউই পাশ করেনি।’

কেউ পাশ না করা অপর দুইটি মাদ্রাসা হলো পশ্চিম কালিশুরী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা ও উত্তর কেশবপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসা। পশ্চিম কালিশুরী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর দাখিল অংশ নেন ১৩ জন ছাত্রী। তাদের কেউই পাশ করেনি। আর উত্তর কেশবপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১ জন দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেও ফেল করেছে। যদিও সরেজমিনে মাদ্রাসার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, এক সময় মাদ্রাসা ঘর ছিল। ঘরটি ঝড়ে ভেঙে পড়ে। আর ঘর তোলা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি ননএমপিও। আবদুল মান্নান নামে এক ব্যক্তি মাদ্রাসাটি এমপিও ভুক্ত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাদ্রাসা শিক্ষক বলেন, বিগত দিন পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষকেরা নকল সহায়তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশ করাতেন। এবছর ইউএনও কঠোরভাবে পরীক্ষা নিয়েছেন। নকল বিহীন পরীক্ষা হয়েছে। তাই যারা পড়াশুনা করেছেন তারাই পাশ করেছেন। বাকিরা সব ফেল।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে শোকজ করা হয়েছে। একই সাথে এমপিও বাতিলের জন্য শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা অধিদপ্তর বরাবর লিখিত আবেদন করা হবে।