ভোলায় সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও মিছিল

পেয়ার ইসলাম নূরউদ্দিন ,ভোলা:

ভোলায় রাসেল খাঁ বাহিনীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। এসময় তাঁরা রাসেল খাঁ বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের জানমাল রক্ষার পাশাপাশি বাহিনীটির সদস্যদেরকে বিচারের আওতায় আনার দাবি তুলেন।

রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়নের কয়েকশো এলাকাবাসী এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।

মানববন্ধনে এলাকাবাসীরা বলেন, ‘ভোলার চর’ এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত রাসেল খাঁ বাহিনীর তান্ডব চলছে। ডাবল মার্ডারের পাশাপাশি এই বাহিনীর সদস্যরা ভোলার চরে কৃষকদের গরু-মহিষ লুট করার পাশাপাশি নানা অত্যাচার করে আসছে। বাহিনীটির প্রধান রাসেল খাঁ একাধিক হত্যা মামলার আসামি। আমরা চাই এই দস্যু বাহিনীর কবল থেকে বাঁচতে।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া মো. ইয়াছিন বলেন, ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর আমার ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিন এবং রাকিব সরদারকে এই বাহিনীর সদস্যরা ভোলার চরে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলে। আজও লাশ দু’টির সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনায় ভোলা ও লক্ষ্মীপুরে দুটি হত্যা মামলা হলেও আসামিরা জামিনে আছেন। জামিনে থেকে আমাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

ওমর ফারুক এবং রুবেল বেপারি নামের আরো দু’জন ভুক্তভোগী বলেন, রাসেল খাঁ বাহিনীর সদস্যরা ভোলার চরে খুন, ভূমিদস্যুতা, জলদস্যুতা এবং চাঁদাবাজি করে আসছে। তাদেরকে চাঁদা না দিলে চরে চাষাবাদ করা যায় না। কেউ চাঁদা না দিয়ে চাষাবাদ করলে দস্যুরা সেই ফসল কেটে নিয়ে যায়।

ভোলার চরে ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়নের কয়েকশো মানুষ বসবাস করে। এছাড়াও চরটিতে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর বেশকিছু বাসিন্দা রয়েছে। তবে চরে বসবাস করা কেউই নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না।

মানববন্ধনে বলা হয়, গতমাসের ৭ তারিখে যৌথবাহিনীর অভিযানে রাসেল খাঁ বাহিনীর দুই সক্রিয় দস্যুকে আটক করা হলেও বাহিনীটির প্রধান রাসেল খাঁ সেদিন যৌথবাহিনীর অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যায়।

মানববন্ধন শেষে ভুক্তভোগীরা ভোলা জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

জানতে চাইলে এই বাহিনীটির প্রধান রাসেল খাঁ বলেন, আমার কোনো বাহিনী নেই। আমি কোথাও কোনো দস্যুতা করি না। ভোলার চরে আমাদের রেকর্ড, পৈত্রিক ও ওয়ারিশ সূত্রে জমি আছে। সেই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত আমার সঙ্গে অপর (যাঁরা মানববন্ধন করেছে) একটি পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছে। সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মানববন্ধন করা হয়েছে। আমিও ভোলার চরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।

ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, ভোলার চরের বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। চরে যাতে এলাকাবাসীরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে, সে বিষয়টি দেখা হবে।