নির্মাণের দু’বছরেই হেলে পড়ল ব্রিজ

মোমিনুর রহমান: মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় রামচন্দ্রপুর গ্রামের খালের ওপরের নির্মিত ব্রিজটি দুই বছরের মাথায় হেলে পড়েছে। তবে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্কার করা হয়নি। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

জানা যায়, দৌলতপুর উপজেলার সদরের চকমিরপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের খালেক মাস্টারের বাড়ির সামনে খালের ওপরে ব্রিজটি এক পাশ কাত হয়ে ডেবে যাওয়াসহ ব্রিজটির দু’পাশের সংযোক সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে হেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তিন বছর আগে বন্যার পানির স্রোতে ব্রিজটি একদিকে হেলে যায় এবং পানির স্রোতে দু’পাশের মাটি সরে গেছে। সে করণে দৌলতপুর, চকহরিচরন, রামচন্দ্রপুর, খলসী ও জিয়নপুর ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ উপজেলাসহ জেলা শহরে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ব্রিজটি দিয়ে যাতায়াত করতে না পারায় তাদেরকে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৬৫ টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট দীর্ঘ এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ব্রিজটি নির্মাণ করেছিলো মেসার্স এল রহমান নামক একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। দৌলতপুর প্রকল্প কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ব্রিজটির তত্ত্বাবধনে ছিলেন। ব্রিজটি চলাচলের জন্য ২০১৮ সালে উন্মুক্ত করে দেন। তার দুই বছর পর ২০২০ সালে বন্যার স্রোতে ব্রিজটি এক পাশ ডেবে যায় এবং ব্রিজটির দু’পাশের সংযোগ সড়ক পানির স্রোতে ভেঙে যায়। এর পরে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ব্রিজটি সংস্কার বা নতুন ব্রিজ করার উদ্যোগ নেয়নি কতৃপক্ষ।

চকহরিচরন গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন বলেন, পরিকল্পিতভাবে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়নি। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী কারণেই দুই বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। সেতু ভাঙার পর থেকে তিন বছর ধরে স্থানীয়রা দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ব্রিজটি ভেঙে পরার কারণে কৃষক তার উৎপাদিত ফসল কয়েক মিটার ঘুরে অনেক সময় ব্যয় করে উপজেলা শহরে নিয়ে যায়। অথচ ব্রিজটি দিয়ে যাতায়াত করতে পারলে অল্প সময়ের মধ্যেই যেতে পারতো।

তিনি জানান, এখান দিয়ে চলাচলের প্রায় ২০ হাজার মনুষ চরম দুর্ভোগে পরেছেন। কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যানবাহন নিয়ে উপজেলাসহ জেলা শহরে যেতে হচ্ছে তাদের এ কারণে সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে অনেক।

চকমিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন- খালে আয়তনের তুলনায় সেতুটি দীর্ঘ অনেক কম ছিল। তাছাড়া ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় নিম্নমানের সামগ্রিক দিয়ে কাজ করেছে। এর ফলে স্রোতে সেতুটি ভেঙে পড়ে। সেতু ভাঙার পর একাধিকবার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় ও এলজিইডি কার্যালয়ে জানিয়েছি। তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। জনসাধারনের দুর্ভোগ কমানোর জন্য খালের উপর দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

রহমান বলেন, ২০২০ সালের বন্যায় খালের পানির প্রবল স্রোতে এবং দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে। আগে সেতুটি ৪০ ফুট লম্বা ছিল। এখন খালে দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় বড় সেতু নির্মাণ করতে হবে। ৪০ ফুটের বড় সেতু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় পড়ে না। আমি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি তারা নতুন সেতুর ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন।