নাটোরে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, আহত ৫

নাটোরের গুরুদাসপুরে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে উপজেলার নাজিরপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা নাটোর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাতে টহল দিলে বর্তমানে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় জামায়াত কর্মী সোহাগের বাবা গুরুদাসপুর থানায় বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আহতরা হলেন, নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহবাহক সালেহ আহমেদ বিপুল (৪০), বিএনপি কর্মী হারুন (৩৬) ও জামাল হোসেন (৪৫)। অপরদিকে জামায়াত কর্মী সোহাগ আহমেদ (৩০), কামাল হোসেন (৩২)।

নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হামিদুর রহমান সবুজ জানান,‘শুক্রবার (১৪ মার্চ) নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে ইফতার মাহফিলের গণসংযোগ করছিলেন জামায়াতকর্মী চিকিৎসক আব্দুর রহিম, সোহাগ আহমেদ ও কামাল হোসেন। একপর্যায় নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক সালেহ আহমেদ বিপুলের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। বিষয়টি সমাধান করা হলেও কিছু সময় পরে বিপুল তার জনবল নিয়ে সোহাগ ও কামালের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারপরেই দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। জামায়াতের দুই কর্মী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’

নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুল বলেন, ‘নাজিরপুর বাজারে আমার বিপুল খেলাঘর নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমি রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্য করি। জামায়াতের নেতাকর্মী যেটা দাবি করেছেন তা সম্পুর্ন মিথ্যা। আমার প্রতিবেশি চিকিৎসক আব্দুর রহিম আমার দোকানের কর্মচারীকে প্রায় সময় মারধর করে। আমি সেই বিষয়ে আব্দুর রহিমের সাথে কথা বলছিলাম। হঠাৎ করেই সে আমার সার্টের কলার চেপে ধরে মারধর করতে থাকে। পরবর্তীতে আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলে স্থানীয় লোকজন এসে বিষয়টি সমাধান করে দেয়। কিন্তু আব্দুর রহিম তার ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর জন্য জামায়াতের নেতাকর্মীকে মোবাইল ফোনে ইফতার পার্টির গণসংযোগে বাধা দেওয়ার মিথ্যা কথা বলে ডেকে নিয়ে আসে। একপর্যায় তারা প্রায় ২৫০-৩০০ লোক হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে আমার এবং আমার সাথে থাকা আরো দুই বিএনপি কর্মীর ওপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই আমরা তিনজন রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে পরে গেলে বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা আমাদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায়। এরপরে জামায়াত নেতাকর্মীরা আমার বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ভয়ে চিৎকার করছিলো। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করলেও এখনও আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যে কোন সময় দলবদ্ধ হয়ে এসে আমার ওপর হামলা চালাতে পারে। গভীর রাতে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে নাটোরে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তার আগে বাড়ি থেকে বের হতে পারছিলাম না। আমার কোন স্বজন বাড়ি থেকে বের হতে না পারায় থানায় এখনও অভিযোগ দিতে পারিনি। তবে দলীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন,‘এক পক্ষের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে খবর পাওয়ার পর পুলিশ পাঠিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’