

জুলাই গণহত্যার পর মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মনোয়ার হোসেন শাহাদাৎ কারাগারে থেকেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ফলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে রয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৪ জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালান যুবলীগ নেতা ও চেয়ারম্যান কাজী মনোয়ার। এসময় তিনজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গা ঢাকা দেন মনোয়ার। পরে চলতি মাসের ২২ এপ্রিল তাকে পুলিশ আটক দেখিয়ে সদর থানায় পাঠায়। কাজী মনোয়ার হোসেনের আটকের খবরে এলাকায় স্বস্তি নেমে এলেও জেল হাজতে বসে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ২২ এপ্রিল সোমবার রাত ৭টার দিকে শ্রীনগরের কামারগাঁও এলাকায় তার বাড়ি থেকে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে সদর থানায় পাঠানো হয়। সদর থানা তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
মনোয়ার হোসেন শাহাদাৎ কামারগাঁও এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান মৃত কাজী ফজলুল হকের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কাজী মনোয়ার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করে। অসংখ্য বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের মারপিটের মতো ঘটনাও ঘটিয়েছেন। তাছাড়া জুলাই ২৪ গণ-অভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের উপর দলবল নিয়ে নির্বিচারে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, জেল হাজতে বসেও কাজী মনোয়ার হোসেন বসে নেই। সেখানেও তিনি আছেন রাজার হালে। জেলে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করছেন। অসাধু কর্মকর্তারা জামিন পেতে তাকে সহযোগিতা করছেন। সেখানে বসেই ঘোষণা দিয়েছেন শিগগিরই জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় ফিরে বৈষ্যম্যবিরোধীদের দেখে নেওয়ার। আর এমন হুমকিতে বৈষম্যবিরোধীরা আতঙ্কে দিন পার করছে। তারা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষকালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। ওই ঘটনায় মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় ৩টি হত্যা মামলাসহ অন্তত ৪টি হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।


