কুড়িগ্রামের রৌমারীতে এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে স্কুলশিক্ষকের ‘আপত্তিকর’ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই শিক্ষকের নাম মোতাহারুল ইসলাম। মোতাহারুল রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা বেগম মজিদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু পরিষদ দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক। ওই ছাত্রী রৌমারীর একটি কলেজের শিক্ষার্থী।
সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে ছাত্রী-শিক্ষকের আপত্তিকর ভিডিওটি। দেখা গেছে ওই ছাত্রী নিজে তার মোবাইলে ভিডিও চালু করে দিয়ে এটি রেকর্ড করেছেন। স্কুল শিক্ষকের এ কর্মে ব্যাপক এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্তসহ আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করছেন কেউ কেউ।
৭ মিনিটের ভিডিওটিতে দেখা গেছে ওই ছাত্রী একটি কক্ষে গিয়ে তার মোবাইল ফোনে ভিডিও অপশন চালু করে একটি গোপন জায়গায় রেখে কার্টুন পেপার দিয়ে ঢেকে দেন। এর কয়েক মিনিট পরে শিক্ষক মোতাহারুল ইসলাম এসে ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ভিডিওটি অনেকের মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের সাথে কথা হলে একাধিক ব্যক্তি জানান, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে শিক্ষক মোতাহারুল ইসলামের বাড়িতে ভাগ্নিকে প্রাইভেট পড়াতে নিয়ে যেতেন ওই কলেজ ছাত্রী। এ থেকে তাদের মাঝে একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিক্ষকের স্ত্রী সন্তান রয়েছে। গোপনে তারা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতো।
বিষয়টি নিয়ে ছাত্রীর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। শিক্ষক মোতাহারুলের স্ত্রী জানান, গত জুলাই মাসে ভিডিওটি তিনি দেখতে পান। তারপর থেকে স্বামী মোতাহারুলের সাথে পুরোপুরি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। স্ত্রীর কাছে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করার কথা বললেও বিয়ের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাকে ও তার দুই মেয়েকে ভরণপোষনও দিচ্ছে না শিক্ষক মোতাহারুল। এর বিচার দাবি করেছেন তার স্ত্রী।
শিক্ষক মোতাহারুল ইসলাম বলেন, ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেছি। বিষয়টি সমাধান হয়েছে। স্ত্রী-সন্তানকে ভরণপোষণ না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাওলানা মো. শাজাহান আলী জানান, ছাত্রীর পরিবার ও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়টি একাধিকবার শালিসে বসা হয়েছিল। কিন্তু সমাধান হয়নি।
এ ব্যাপারে দাঁতভাঙ্গা বেগম মজিদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ভিডিওটির কথা শুনেছি। ছাত্রী অন্য প্রতিষ্ঠানের। তাই আমার কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঈনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আমরা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।