ইয়েমেনে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি, গুপ্তচর নিয়োগে নেমেছে মোসাদ

ইয়েমেনের বিরুদ্ধে একটি সম্ভাব্য সামরিক হামলার প্রস্তুতি হিসেবে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ সেদেশে গুপ্তচর (এজেন্ট) নিয়োগের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। এমনটাই দাবি করেছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ইতালিয় ম্যাগাজিন ইল ফারো সুল মন্ডো।ম্যাগাজিনটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান গাজা যুদ্ধ থেকে ইয়েমেনের সংঘাতকে আলাদা করে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার কৌশলগতভাবে রাজধানী সানা-তে সুনির্দিষ্ট সামরিক হামলার পরিকল্পনা করছে।প্রতিবেদন অনুসারে, মোসাদ সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বড় আকারের নিয়োগ অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে ইয়েমেনের আন্সার আল্লাহ (হুতি) আন্দোলনের বিরোধীদের ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গোপন অভিযান ইউনিট— ইউনিট ৫০৪-এ যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।সানার পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করেছেন যে, এই কার্যকলাপগুলো ইয়েমেনে ইসরায়েলের গোয়েন্দা কার্যক্রমের সম্প্রসারণ এবং গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইয়েমেনের সমর্থনের জবাবে ‘প্রতিরোধমূলক’ হামলা চালানোর ইচ্ছার স্পষ্ট ইঙ্গিত।’ইল ফারো সুল মন্ডো’ জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইয়েমেনি সাহায্য স্থগিত হওয়ার পরেও নেতানিয়াহু ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী। ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-এর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, গাজা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও ইসরায়েল ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আক্রমণ অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করছে।ইসরায়েলের এই তৎপরতা নতুন নয়। গত বছরের ডিসেম্বরে, ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ মোসাদ এবং মার্কিন সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) সাথে যুক্ত একটি বড় গুপ্তচর নেটওয়ার্কের সন্ধান পায়।সানার কর্তৃপক্ষ জানায়, এই নেটওয়ার্কটির প্রধান কাজ ছিল ইয়েমেনি সামরিক স্থাপনা— যেমন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ঘাঁটি, নৌবাহিনীর অবস্থান এবং সামরিক-রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা। এই নেটওয়ার্কটি সৌদি এজেন্ট হামিদ হোসেন আল-মাজালি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয়দের নিয়োগের মাধ্যমে গাজার প্রতি সেনাবাহিনীর সহায়তার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কাজ করা।এই গুপ্তচরবৃত্তির তীব্রতা বৃদ্ধি আঞ্চলিকভাবে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইয়েমেনি নেতৃত্ব ইসরায়েলের হুমকির বিরুদ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ ইসলামিক ফ্রন্ট গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।প্রতিবেদনটি উপসংহারে বলছে যে, মোসাদের এই জোরদার গুপ্তচর অভিযান স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে গাজায় যুদ্ধবিরতির পরেও মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।