আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকারের নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বিগত ১২ বছরে পুলিশের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার লিডিং ফোর্স হতে চাই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ নেতৃত্বে দেশের প্রভূত উন্নতি হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হয়েছে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে পুলিশেরও উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন, যা এক বড় চ্যালেঞ্জ। দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে এ চ্যালেঞ্জ নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ (পিএসসি) এ মাস্টার্স ইন অ্যাপ্লাইড ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ ম্যানেজমেন্ট (এমএসিপিএম) ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
পুলিশের পেশাকে একটি ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস হিসেবে উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, সভ্য সমাজে পুলিশ ছাড়া কোন দেশ কল্পনা করা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১২ বছরে পুলিশের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে সমুন্নত একটি সুসংহত পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে ব্যাপক কর্মসূচী নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এজন্য প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন এবং প্রশিক্ষণ কাঠামোবদ্ধ করা হয়েছে। বেসিক ট্রেনিং পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী করা হয়েছে। প্রতিটি স্তরে প্রত্যেক পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের জন্য প্রতিবছর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশের জনগণ আগামি দু’বছরের মধ্যে এর সুফল পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ‘লিডিং ফোর্স’ হতে চাই’।
পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর রেক্টর ড. মোহাম্মদ নাজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমডিএস (একাডেমিক এন্ড রিসার্চ) মো. গোলাম রসুল।
গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা ডিগ্রি অর্জনকারী গ্রাজুয়েটদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
উপ উপাচার্য বলেন, সবার জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে পুলিশ অনন্য অবদান রেখেছেন, যা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
সভাপতির বক্তৃতায় রেক্টর ডিগ্রি অর্জনকারী গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, ডিগ্রি অর্জনের ফলে আপনাদের দক্ষতা বেড়েছে। অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে হবে। দায়িত্ব পালনকালে সততা ও দক্ষতার অনন্য নজির স্থাপন করতে হবে।
অতিরিক্ত আইজি (এএন্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজি এসবি মীর শহীদুল ইসলাম, এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজি মোশারফ হোসেন, টিএন্ডআইএম’র অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ ইব্রাহিম ফাতেমী, অতিরিক্ত আইজি (অর্থ) এস. এম. রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) মো. মাজহারুল ইসলাম, এটিইউ’র অতিরিক্ত আইজি মো. কামরুল আহসান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ, পিএসসি’র ফ্যাকাল্টিগণ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যাচের ৫৭ জন গ্রাজুয়েটকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এরমধ্যে প্রথম ব্যাচে ১৪ জন, দ্বিতীয় ব্যাচে ১৯ জন এবং তৃতীয় ব্যাচে ২৪ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে পুলিশের ৩১জন, সশস্ত্র বাহিনীর ৬ জন, আইনজীবী ৩ জন, কর্পোরেট সার্ভিস ৭ জন, শিক্ষক ৩ জন, চিকিৎসক ১ জন, সাংবাদিক ১ জন এবং অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবী ৫ জন রয়েছেন। তিনটি ব্যাচে ডিগ্রি অর্জনকারী ৫৭ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফল লাভ করেছেন গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা।
২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ হতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পুলিশের এ্যাপেক্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স ইন অ্যাপ্লাইড ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। পরে প্রধান অতিথি গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন।