সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আমরা সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করব। যেহেতু বিষয়টি আদালতের কাছে গেছে, সরকার স্বভাবতই অপেক্ষা করবে।
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মানিক মিয়া মিলনায়তনে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে ‘ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন এবং জননেত্রীর কারাবন্দি দিবস’ উপলক্ষে ‘বিচারহীনতায় বাংলাদেশ : বেআইনি আইন ইনডেমনিটি ও কারারুদ্ধ জননেত্রী’ শীর্ষক সেমিনারে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আনিসুল হক বলেন, আদালত কী বলে, তা শুনে সরকার পদক্ষেপ নেবে। সর্বোচ্চ আদালত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যেতে বললেন। এটা আদালত কর্তব্যবোধের জায়গা থেকে বলেছেন। শিক্ষকদের প্রতি বলেছেন, তারা যেন শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পরিবেশ তৈরি করেন। এরপরও কি স্লোগান দেওয়ার যৌক্তিকতা থাকে?
আনিসুল হক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করেছেন, তারপর ৭-৮ জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা হাইকোর্টে রিট করেছেন। আজ যারা আন্দোলন করছেন তারা কেন একজন আইনজীবী দিলেন না। পত্রিকায় হাইকোর্টের রায়ের কথা শুনে হঠাৎ করে রাস্তায় নামলেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেলেই হতো, এর আগেও হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, যারা ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তাদের একটা প্রয়োজন ছিল মানুষকে ভয় দেখানো। একারণেই ইমডেমনিটি আইন করা হয়েছিল। কেউ যাতে এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে না পারে।
‘ইনডেমনিটি আইনই হচ্ছে আজকের স্লোগানের ধারাবাহিকতা। ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় এসব হচ্ছে আজ।’, যোগ করেন আনিসুল হক।
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সেমিনারের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমি যেহেতু ক্যাম্পাসে থাকি, ঘটনার সময় মনে হচ্ছিল পাকিস্তান কলোনিতে আছি। ওইদিনের আগেও অনেক মেয়েকে দেখেছি ‘‘আমি রাজাকার” লিখে বসে ছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে খুবই অপমানজনক স্লোগান দিচ্ছিল।’
ড. মীজানুর বলেন, একটি অধিবেশন ডেকে সংসদ আইন পাস করলেও সুপ্রিম কোর্টও তো বাতিল করে দিতে পারেন। উচ্চ আদালতের তো সেই এখতিয়ার রয়েছে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য তারানা হালিম, ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী এবং সাংবাদিক নেতা মানিক লাল ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু গবেষক মো. আফিজুর রহমান।