অন্যায়, অপকর্ম, অনিয়ম-দুর্নীতি ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান নতুন করে অনেকের মুখোশ উন্মোচন করছে। সরকারি দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে এতদিন তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসলেও এখন আর পার পাওয়া যাবে না, অভিযানের মাধ্যমে এমন বার্তাই দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে ইতোমধ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। তার নির্দেশনায় শুরু হওয়া এই শুদ্ধি অভিযান তাতে যে থেমে থাকবে না তা প্রমাণ হয়েছে।
কলাবাগান ক্রীড়া চক্র ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ওই ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজসহ ৫ জনকে আটক করেছে র্যাব। সিলগালা করা হয়েছে ধানমন্ডি ক্লাব, এছাড়াও অভিযান চালানো হয়েছে এলিফ্যান্ট রোডের অ্যাজাক্স ক্লাব ও সংলগ্ন একটি ভবনে। এসব ক্লাবে অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের প্রায় সবাই সরকারি দলের সঙ্গে জড়িত থাকার খবর গণমাধ্যমে উঠে আসছে।
এর আগে রাজধানীর নিকেতনের বাসা থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ দেহরক্ষীসহ জি কে শামীমকে আটক করা হয়েছে। তার অফিস থেকে নগদ ১০ কোটি টাকা ও ২০০ কোটি টাকা সমপরিমাণের বিভিন্ন ব্যাংকের এফডিআর চেক, বিদেশি মদ ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে র্যাব জানিয়েছে। র্যাবের ধারণা, ঠিকাদারির আড়ালে অবৈধভাবে এসব অর্থ উপার্জন করেছেন জি কে শামীম।
তারও আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনাসহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি ইতোমধ্যে একাধিক মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এমন কঠোর পদক্ষেপ সময়োপযোগী বলে আমরা মনে করি। একইসঙ্গে তার সাহসী ভূমিকাকে আমরা স্বাগত জানাই। অভিযান অব্যাহত থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ওবায়দুল কাদের যে আশ্বাস দিয়েছেন তাতে আমরা আস্থা রাখতে চাই।
বাংলাদেশকে যতদিন শিশুদের জন্য নির্ভরযোগ্য, সুন্দর ও নিরাপদ বাসস্থান হিসেবে গড়ে তোলা না যায়, ততদিন যেন মাদক, সন্ত্রাস ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকে। তবে এই অভিযান যেন অপরাধের মূল হোতাদের বিরুদ্ধে থাকে, অন্যদিকে কেউ যেন এই অভিযানের মোড় ঘুরিয়ে দিতে না পারে, সেই বিষয়ও খেয়াল রাখতে হবে।