নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তাদের নিকট ন্যায্য মূল্য পৌঁছে দিতে স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম (টিটু) এমপি।
পণ্য মজুত করে কেউ কৃত্রিম সংকটের চেষ্টা করলে শক্তভাবে মোকাবেলার হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রকৃতি ব্যবসায়ীদের সরকার থেকে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন প্রতিমন্ত্রী।
আজ সচিবালয়ে প্রথম কর্মদিবসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার প্রধানদের সাথে সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। ভয়-ভীতি নয় আমরা সবাই আমাদের দেশকে ভালবাসি। দেশের মানুষ ভালো থাকুক এটাই সবার প্রত্যাশা। এ দেশের মানুষ যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করে তারা মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকেন। তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই সরকারের কাজ।
আহসানুল ইসলাম বলেন, সরবরাহ ভালো থাকলে বাজারে কেউ কারসাজি করার সুযোগ পাবে না। আবার কোনো ব্যবসায়ী মহল উচ্চ মূল্যে বিক্রিরও সুযোগ পাবে না। কারসাজি করে বাজার অস্থিতিশীল করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। মজুতদারিদের শক্ত হাতে দমন করা হবে। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য মন্ত্রণালয় যেমন কৃষি, খাদ্য ও শিল্পসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থার সাথে সমন্বয় করে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
পণ্যের বহুমুখীকরণ করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী জানান, গার্মেন্টস শিল্পের ন্যায় চামড়া এবং পাট শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। একটি পণ্যের উপর উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকা যাবে না। পাট ও চামড়া শিল্পকে বিভিন্ন ইনসেনটিভ দিয়ে তুলে আনতে হবে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে বলেও জানান।
তিনি আরোও বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া এবং ইজরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের প্রভাব অপরদিকে ডলার সংকটের ফলে সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরেও আমাদের সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখার। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করলে বাংলাদেশ অবশ্যই সফল হয়েছে বলে দাবি করা যায়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আহসানুল ইসলাম বলেন, রমজান আসলেই একশ্রেণীর অসাধু গোষ্ঠী পণ্য মজুদ করে থাকে। এই মজুতদারদের শক্তভাবে মোকাবেলা করা হবে। তিনি আরো বলেন এরা কখনোই প্রকৃত ব্যবসায়ী হতে পারে না কারণ প্রকৃত ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার লোভে খাদ্য মজুত করে না।
এপ্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, রমজান মাসের প্রয়োজনীয় পণ্য মজুতের ব্যবস্থা আছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। এটা সঠিক কিনা আমাকে জানতে হবে। তবে আমি আশাবাদী আসন্ন রমজানে খাদ্য পণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকবে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করে ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সকল ব্যবসায়ী মহলের সাথে বসে তাদের জানিয়ে দিবো যারা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আর কেউ যদি কারসাজি করে সাধারণ জনগণের পকেট কাটে, সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে এতো বড় দায়িত্ব দিয়েছেন সকলের সহযোগিতায় তা যেন সততা-নিষ্ঠার সাথে পালনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতিদান দিতে পারেন সেজন্য তিনি দেশবাসীর নিকট দোয়া কামনা করেন।
এসময়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার প্রধান এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।