সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে শেষ হয়েছে বাঘ গণনা। প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ জরিপে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির আভাস মিলেছে। জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হবে আগামী মাসে। তখন জানা যাবে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা। এ পটভূমিতে আজ সোমবার (২৯ জুলাই) পালিত হচ্ছে বিশ্ব বাঘ দিবস।
এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরু হয়। এর মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয় চার মাস আগে। এখন চলছে বিশ্লেষণ। এবারের শুমারিতে বাঘের সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা বন বিভাগের। অন্যদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সমীক্ষা বলছে, বনে যে খাবার আছে, তাতে টিকে থাকতে পারে কমপক্ষে ১৬৪টি বাঘ।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে শুমারি হয়। এ বছরের প্রথম দিকে বনের চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জেও একই পদ্ধতিতে শুমারি করা হয়েছে। ৪০ দিন ধরে প্রতিটি রেঞ্জের ১৪৫টি পয়েন্টে দুটি করে ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। এ ছাড়া সুন্দরবনে খাল সার্ভের মাধ্যমে বাঘের পায়ের ছাপ সংগ্রহ করা হয়।
বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প পরিচালক ও সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, বাঘের প্রায় সাড়ে সাত হাজার ছবি পাওয়া গেছে। একই বাঘের ছবি পাওয়া গেছে বহুবার। এজন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রতিটি বাঘের ‘ইউনিক আইডি’ করা হয়েছে। এসব ছবি বিশেষজ্ঞদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। তারা সেগুলো বিশ্লেষণ করছেন।
তিনি জানান, এবারের শুমারিতে সুন্দরবনের অন্য তিনটি রেঞ্জের মতো খুলনা রেঞ্জেও বাঘের অনেক ছবি পাওয়া গেছে। এবারই প্রথম সবচেয়ে বেশি বাঘের বাচ্চার ছবি পেয়েছি। এ থেকে ধারণা করছি, বাঘ আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যাটি কত, তা জানাতে কয়েকদিন সময় লাগবে।
এদিকে, বাঘের জন্য হুমকি বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে গবেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ আজিজ বলেন, সুন্দরবনে বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ ও শূকর। কিন্তু হরিণ শিকার বন্ধ হয়নি। এটি বাঘের জন্য পরোক্ষ হুমকি।
বন বিভাগ জানায়, এর আগে ২০১৮ সালে ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে করা শুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪।