ক্ষোভ থেকেই চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল বাখেরা জাহাজের মাস্টারকে হত্যা করেন আকাশ মন্ডল ইরফান। পরে জাহাজে থাকা অন্য সদস্যরা বিষয়টি ফাঁস করে দিতে পারেন, এমন আতঙ্ক থেকে বাকিদেরও গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের আগে সবাইকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়েছিলেন ইরফান। এরমধ্যে মাস্টারসহ ৭ জনের মৃত্যু হলেও প্রাণে বেঁচে যান জাহাজের সুকানি জুয়েল।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) অভিযুক্ত আকাশ মন্ডল ইরফানের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
এর আগে, সকালে চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই জাহাজে ৮ জন নন, ৯ জন ছিলেন। আর ওই ব্যক্তি হলেন আকাশ মন্ডল ইরফান। কথা বলতে না পারায় লিখে এ তথ্য জানান আহত সুকানি জুয়েল। এ ঘটনায় মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলকে।
বাদী মামলার এজাহারে আহত ও খুন হওয়া ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করেন। হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিরা হলেন- মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার মো. সজিবুল ইসলাম, লস্কর মো. মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, সালাউদ্দিন, আমিনুর মুন্সী ও বাবুর্চি রানা কাজী। এছাড়া আহত হয়েছেন সুকানি মো. জুয়েল।
মামলার বাদী মাহবুব মুর্শেদ এজহারে উল্লেখ করেন, জুয়েলের গলাকাটা থাকায় সে কথা বলতে পারেনি। ঘটনার বিবরণ দিতে পারেনি। সে সুস্থ হলে ডাকাতদল দেখলে চিনবে বলে ইশারায় জানায়। তবে জুয়েলের সঙ্গে ইরফান নামে আরেকজন ছিল বলে সে লিখে জানায়। তবে তার ঠিকানা দিতে পারেনি। ঘটনার পর ওই জাহাজ একটি রক্তাক্ত চাইনিজ কুঠার, একটি ফোল্ডিং চাকু, দুটি স্মার্ট ফোন, দুটি বাটন ফোন, একটি মানিব্যাগ, নগদ ৮ হাজার টাকা, একটি বাংলা খাতা, একটি সীল, একটি হেডফোন জব্দ করেছে পুলিশ।
নৌ পুলিশ জানিয়েছে, আহত জুয়েল বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মোহসীন উদ্দিন জানান, মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নিহতদের প্রতি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা ও নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।