রাজধানীর গুলশান থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটি থেকে সদ্য পদ হারানো হেলেনা জাহাঙ্গীর তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
রিমান্ডের শুরু থেকেই হেলেনা জাহাঙ্গীর বারবার কেঁদে উঠছেন বলে জানা গেছে। আদালতের মতো রিমান্ডেও হেলেনা বারবার নিজেকে সরকারি লোক এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলে দাবি করেন।
পুলিশের গুলশান জোন সূত্রে জানা যায়, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর বলেন, আমি সরকারি লোক। আমার কোনো পদ এখনো হারাইনি। এখনো সে বিষয়ে কোনো নোটিশ পাইনি। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করি, কেউ যদি তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলে আমি প্রটেস্ট করি। আমি এখনো পদে বহাল রয়েছি। আমি ফেসবুকে কোনো ধরনের বাজে মন্তব্য করিনি। কেউ কিছু বলতে পারবে না। আমি সরকারি লোক।’
এর আগে শুক্রবার (৩০ জুলাই) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ শাহানুর আলম মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে হেলেনাকে আদালতে হাজির করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী ৩ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে অভিযান শুরু করে র্যাব। দীর্ঘ চার ঘণ্টা অভিযান শেষে রাত ১২টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং পরে র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে তাকে গ্রেফতারের তথ্য জানায় র্যাব। ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এরও আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। তার বাসায় বিপুল পরিমাণের মাদকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনসহ চারটি ধারায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চাকরিজীবী লীগের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে তারা দুই-তিন বছর ধরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু দলের নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজেকে জয়যাত্রা নামে কথিত একটি আইপিটিভি’র মালিক বলে পরিচয় দেন। সেখান থেকে সারাদেশে সংবাদকর্মী নিয়োগ দিয়ে চাঁদাবাজি করেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।