বিশ্বনেতাদের মঞ্চে ইরানকে শাসালেন নেতানিয়াহু

কাউকে পাত্তাই দেয় না ইসরায়েল। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সেই নমুনা আরেক বার দেখালেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এদিন তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন। সেই ভাষণে বিশ্বনেতাদের সামনে ইরানকে রীতিমতো শাসালেন। তার প্রতিবাদ তো দূরে থাক, নেতানিয়াহুর জ্বালাময়ী বক্তব্যকে করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান বিশ্বনেতারা।

অর্থ আর অস্ত্রের গরমে বিশ্ব দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইসরায়েল। মার্কিন মুলুকেও দেশটির প্রভাব খুব বেশি। আর তাই, সব সময় ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে যখন একসঙ্গে দুটি যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল, তখন দেশটির টুঁটি চেপে ধরার পরিবর্তে, অস্ত্র আর অর্থ দিচ্ছে ওয়াশিংটন। নিজের পশ্চিমা মিত্রদেরও ইসরায়েলের পাশে এনে দাঁড় করিয়েছে দেশটি।

আমেরিকা মদদে এবার জাতিসংঘের মঞ্চে দাঁড়িয়েই ইরানকে সরাসরি হুমকি দিলেন নেতানিয়াহু। হুঙ্কার দিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাদের হামলা করলে আমরাও হামলা করব। ইরানের যে কোনো জায়গায় ইসরায়েল আঘাত হানতে সক্ষম। বলি হওয়া তো দূরে থাকা, ইসরায়েল পাল্টা আঘাত করবে। ইসরায়েল জয়ী হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের দুটি প্রক্সির সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে ইসরায়েল। গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন ও লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে সমানতালে ইসরায়েল লড়াই করছে। শুক্রবার সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকক্ষে নেতানিয়াহু ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে করতালিতে তাকে স্বাগত জানায় ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল। আর সেখান থেকে বেরিয়ে যায় ইরানের প্রতিনিধিরা।

নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধের মাঝে তিনি জাতিসংঘে আসতে চাননি। কিন্তু ইসরায়েলের সত্য বক্তব্যটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার বাধ্যবাধকতা থেকেই জাতিসংঘে এসেছেন বলে জানান নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ইরানের অভিশাপ বা আরব ও ইহুদিদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে ইসরায়েল। এসময় তার হাতে দুটি মানচিত্র ছিল। একটির ওপর লেখা ছিল, অভিশাপ। অপরটির ওপর লেখা ছিল আশীর্বাদ।

ফিলিস্তিন ও লেবাননে যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে আসা বেশিরভাগ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। হামলা বন্ধে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। এসব বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘে হাজির হয়ে, ইসরায়েলের পক্ষে জোরালো সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন নেতানিয়াহু। তার দেশ অস্তিত্বহীনতার মুখে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী।