বারের গোপন সুড়ঙ্গে অবৈধভাবে মজুত কোটি টাকার মদ

ঢাকার শাহবাগে পিকক বার থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মদ ও বিয়ার উদ্ধার করেছে র‍্যাব। পিকক বারটির তৃতীয় তলা পর্যন্ত অনুমোদন থাকলেও চতুর্থ তলার অনুমোদন ছিল না। বৈধ লাইসেন্স ব্যবহার করে অবৈধভাবে পিকক বারের নিচতলায় তৈরি করা হয় গোপন সুড়ঙ্গ। প্রতিষ্ঠানটি কোটি টাকার মাদক অবৈধভাবে মজুতের মাধ্যমে ব্যবসা চালাচ্ছিল।

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ওই বারে যৌথ অভিযান চালিয়ে কোটি টাকার দেশি-বিদেশি মদ ও বিয়ার জব্দসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৪ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। তারা হলেন- মো. মজিবুর রহমান (৫০), মো. লিটন (৩৫), মো. ওলিউর রহমান (৩৮) ও জহিরুল ইসলাম (৩৮)।

অভিযান শেষে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কোটি টাকার বেশি মূল্যের অবৈধ মাদক জব্দ করা হয়।

এরমধ্যে আড়াই হাজার দেশি বিয়ার, দেড় হাজার বিদেশি বিয়ার, ৬০০ বোতল দেশি মদ ও ৭০০ বোতল বেদেশি মদ জব্দ করা হয়েছে। রাত ১১টা চলা পর্যন্ত অভিযানে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বারের মালিক ও বাসার মালিক সম্পর্কেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে আসতে বলা হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র‍্যাব-৪ এর একটি দল, র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি দল অভিযান পরিচালনা করছে। হোটেল পিকক লিমিটেডের নিচতলা, দ্বিতীয় তলা ও তৃতীয় তলায় বারের অনুমোদন ছিল। কিন্তু চার তলার অনুমোদন ছিল না।

তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি, চার তলায় অবৈধ মাদক রয়েছে। চার তলা থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদক জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে নিচতলায় সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখান থেকেও বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদক জব্দ করা হয়।

তিনজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, যাদের মাদকের লাইসেন্স নেই, যারা বাসায় বসে মদ্যপান করে ও বাসায় বিভিন্ন মিনিবার পরিচালনা করে তাদেরকে বিভিন্ন সময় এখান থেকে মদ-বিয়ার সাপ্লাই দেওয়া হতো।

পিকক বারের লোকেশন শাহবাগ থানার কাছেই। বিপুল পরিমাণ অবৈধ মদ রাখার বিষয়ে থানা-পুলিশের কোনো ব্যর্থতা রয়েছে কি-না জানতে চাইলে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এই বারে যেভাবে মদ ও বিয়ার রাখা হয়েছে তা খুঁজে বের করা খুবই কঠিন।

পরে র‍্যাব-৪ জানায়, পিকক বারের মালিক ফিরোজুর রহমান। বারের মালিক ও বাড়ীর মালিককে ডাকা হলে তারা উপস্থিত না হওয়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ডিডি, এডি, পরিদর্শকসহ ও অভিযানিক দল র‌্যাব-৪ এর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হোটেল পিককের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে উদ্ধার মাদক অবৈধভাবে অননুমোদিত গোপন স্থানে মজুদ করায় জব্দ করা হয়।

র‍্যাব-৪ জানায়, অধিক লাভের উদ্দেশ্যে অনুমোদিত বৈধ মাদকের সঙ্গে অবৈধভাবে বিভিন্ন গোপন ও বিশেষ সুড়ঙ্গে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি মাদকদ্রব্য মজুদ এবং অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে হোটেল পিককের মালিক, বাড়ির মালিক ও বারের ম্যানেজারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলমান।