রাজধানীতে সিটি নির্বাচনের আমেজ বিরাজ করার কথা থাকলেও এখন ওই পরিবেশ নেই বললেই চলে। নির্বাচনের দিন, অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় আয়োজন সরস্বতী পূজা। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ পেছানোর দাবিতে আন্দোলন চলছে রাজধানীতে।
ঢাকা সিটি নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনে ৩ দফা দাবি নিয়ে বুধবারও ঘণ্টাখানেক শাহবাগ অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এমন ধর্মীয় আয়োজনের দিন নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
বিষয়টি এর আগে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। রিটের শুনানি খারিজ করে ওই দিনই নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত বিষয়টিতে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, সেজন্য কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানোর সুযোগ হয়তো নেই। কিন্তু দেশের একটি বিরাট অংশের মানুষ যে বিষয়টি পছন্দ করেননি, সেটা ইতোমধ্যে প্রতীয়মাণ।
সরস্বতী পূজা দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। তারা ইচ্ছে করলে ওইদিন ঐচ্ছিক ছুটিও নিতে পারেন বলে সরকারি ছুটির নীতিমালায় উল্লেখ আছে। এছাড়া ওই পূজা যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য নির্বাচন উপলক্ষে সেই পর্বে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। যা আসলে সনাতন ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার ক্ষুণ্ণ হবার শামিল বলে আমাদের মনে হয়েছে। বিষয়টি আমাদের খুবই মর্মাহত করেছে।
পঞ্জিকায় দেখা তারিখ ও পূজার রীতিনীতির মারপ্যাঁচে এই বিভ্রাট বা জটিলতা হয়েছে বলে মেনে নিলেও বিষয়টি পরিবর্তনের সুযোগ ছিল বলে আমরা মনে করি। নির্বাচনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা যথার্থ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেননি বললেও ভুল হবে না। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড কখনোই কাম্য নয়।
আমাদের আশাবাদ, ভবিষ্যতে এ ধরণের ভুল বা বিভ্রাট তৈরি যেন না হয় সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা যথেষ্ট পরিমাণ সতর্ক হয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। এখনও সম্ভব হলে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় আয়োজন পালনের সুযোগ করে দিয়ে নির্বাচনকে সবার কাছে উৎসবমুখর করে তুলতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।