শিশু-কিশোর মাসিক নতুন কিশোরকণ্ঠ আয়োজিত ‘কিশোরকণ্ঠ জাতীয় সায়েন্স ফিকশন লেখা প্রতিযোগিতা ২০২৩’-এর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। আজ (শনিবার) ২৪শে ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এক মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।
প্রতিযোগিতায় পাঁচ শতাধিকের বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম পুরস্কার ১৫,০০০/- (পনেরো হাজার) টাকার শিক্ষাবৃত্তি, দ্বিতীয় পুরস্কার ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকার শিক্ষাবৃত্তি, তৃতীয় পুরস্কার ৮,০০০/-(আট হাজার) টাকার শিক্ষাবৃত্তিসহ মোট ১১ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেকের হাতে সনদপত্র, ক্রেস্ট, কলম, মূল্যবান বইসহ ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়।
কিশোরকণ্ঠের সম্পাদক বিশিষ্ট কবি মোশাররফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে এবং কিশোরকণ্ঠ ফাউন্ডেশনের এডমিন ম্যানেজার আরিফ হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নতুন এক মাত্রা-এর সম্পাদক কবি আল মুজাহিদী। উপস্থিত ছিলেন কিশোরকণ্ঠ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম এবং কিশোরকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নির্বাহী সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, “কিশোরকণ্ঠ একদল তরুণকে স্বপ্ন দেখতে নতুনভাবে সহযোগিতা করছে। সুন্দর স্বপ্ন ও দেশ বির্নিমাণে কিশোরকণ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। কিশোরকণ্ঠ এটা বিশ্বাস করে যে-কোনো সভ্যতা এগিয়ে যাওয়ার আগে সেটা নিয়ে কিছু মানুষ চিন্তা করে। সায়েন্স ফিকশন এমন একটি সাহিত্য যেখানে আগামীর বিশ্ব কেমন হবে তার চিত্র তুলে ধরা হয়। ক্রিয়েটিভ তরুণ যারা নীতিনৈতিকতাকে প্রমোট করছে, তাদের হাত ধরেই আগামীর বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি আল মুজাহিদী বলেন, “অন্ধকার এবং আলো দুটোর অস্তিত্বই বিদ্যমান। আমরা যাত্রা করবো কোন দিকে এবং কোন মাত্রায় সেটা আমাদের খুব গভীরভাবে ভেতর থেকে অনুভব করতে হবে। আজকে মানুষ আছে মানব নেই, মানবিকতার উত্তম সাধনার মধ্য দিয়ে জীবনের যাত্রাকে এগিয়ে নিতে হবে।”
কিশোরকণ্ঠ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য নিয়ে কাজ করে। কিশোরকণ্ঠ সমাজের চিত্রগুলো তুলে ধরে মেধাবীদের সত্য অনুসন্ধানী ও সমাজ বির্নিমাণের স্বপ্ন দেখায় এবং সত্যিকারের সাহিত্যিক হয়ে গড়ে ওঠার স্বপ্ন দেখায়। আমাদের এই সময় সবচেয়ে বড়ো অভাব শুদ্ধ সাহিত্য চর্চার। ২১ আমাদের যে ভাষার অধিকার দিয়েছে আজ আমরা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের সাহিত্য জীবনমুখি ও বাস্তবমুখি হয়নি। কিশোরকণ্ঠ এই আধুনিক যুগে এসেও তার ব্যাতিক্রমি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আজকে যারা সায়েন্স ফিকশন লেখায় বিজয়ী হয়েছে, আমি বিশ্বাস করি তারা আগামী দিনে এই সাহিত্যের অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
সভাপতির বক্তব্যে কিশোরকণ্ঠের সম্পাদক কবি মোশাররফ হোসেন খান বলেন, “কিশোরকণ্ঠ একরাশ স্বপ্ন নিয়ে চল্লিশ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল যা এখনো অব্যাহত আছে। কিশোরকণ্ঠের মাধ্যমে অসংখ্য লেখক উঠে এসেছে। তারা আজ জাতীয় পর্যায়ে অনেক বড়ো ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বর্তমানে তারা বাংলা সাহিত্যকে প্রতিনিধিত্ব করছে। কিশোরকণ্ঠ বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে জ্ঞানের রাজ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন ও আদর্শ নাগরিক তৈরি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে। সারা দেশ থেকে প্রতিভাবানদের তুলে আনে। সায়েন্স ফিকশন প্রতিযোগিতায় যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে থেকে যদি পাঁচজনও সাহিত্য চর্চা অব্যাহত রাখে তবে বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ হবে। শুদ্ধ সাহিত্য চর্চা জাতিকে সঠিক পথ দেখাবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কিশোরকণ্ঠের সহকারী সম্পাদক খন্দকার নূর হোসাইন, কিশোরকণ্ঠ পরিবারের সদস্য মো. মোর্তাজুল ইসলাম, মুস্তফা আজাদ, আতিকুর রহমান, মো. আতহারুল ইসলাম, মো. নাহিদ হাসান, গোলাম মোস্তফা, হাসান আলী প্রমুখ।
পুরস্কার বিজয়ী প্রথম ৫ জন যারা :
১ম স্থান : আতিয়া তাসনিম প্রমা, একাদশ শ্রেণি, হলিক্রস কলেজ, ঢাকা।
২য় স্থান : ইসরাত জাহান হাফসা, দশম শ্রেণি, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা।
৩য় স্থান : ইশতিয়াক হাসান, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী।
৪র্থ স্থান : নুজহাত নওরিন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা।
৫ম স্থান : সাদ মোহাম্মদ, দশম শ্রেণি, দারুন নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা, ঢাকা।
এছাড়াও বিশেষভাবে পুরস্কার পায় তারেক হাসান খান, সাদবিন আল জুবায়ের, মুমতাহিনা, তন্ময় নাহা, আব্দুল্লাহ আল মোমিন, নিলুফা ইয়াছমিন প্রমুখ।