বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ২৫ মার্চ শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য জামিন পাওয়ার পর থেকেই তার বাসভবন গুলশানের ‘ফিরোজা‘য় অবস্থান করছেন। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তির পরই হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন তিনি।
সেই হিসেবে আজ বুধবার খালেদা জিয়ার হোম কোয়ারেন্টাইনের ১৪ দিন পূর্ণ হচ্ছে। এই সময়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি৷ শারীরিক অবস্থা আগের মতোই আছে। তবে তিনি আগের তুলনায় মানসিকভাবে অনেক সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। এই সময়ে তিনি কোনো দলীয় নেতাকর্মীকে সাক্ষাৎ দেননি।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হলেও তিনি কারো সঙ্গে দেখা করবেন না। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় শুধু ব্যক্তিগত চিকিৎসকরাই তার বাসায় যাওয়া-আসা করবেন এবং চিকিৎসা দেবেন। লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান চিকিৎসার সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন।
খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘আজ বুধবার উনার কোয়ারেন্টাইন শেষ হবে। তাঁর শরীরের অবস্থা ভালো না। এখনো দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারছেন না। তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। তবে মানসিক অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো।’
‘আজকে কোয়ারেন্টাইন শেষ হলেও খালেদা জিয়া কারো সঙ্গে দেখা করবেন না। কারণ উনার শারীরিক অবস্থা এখনো ভালো নয়। আর তা ছাড়া বর্তমান এ রোগটা (করোনাভাইরাস) তো ছোঁয়াচে। তাই উনি কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। বাসায় তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকারই চিকিৎসা দেবেন, যোগ করেন সেলিমা ইসলাম।
অন্যদিকে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের সভাপতি হারুন আর রশীদ বলেন, ‘ম্যাডামের চিকিৎসা এবং তার সবকিছু পরিবার থেকে তদারকি করা হচ্ছে। আর আমরাও বিষয়টা পরিবারের উপর ছেড়ে দিয়েছি৷ উনার কোয়ারেন্টাইন আজ শেষ হলেও তিনি বাসায় থাকবেন। কারণ উনি এখনো আগের অবস্থায় আছেন।’
ড্যাবের সভাপতি আরো বলেন, ‘এ ছাড়া ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) প্রধান চিকিৎসক এফ এম সিদ্দিকী সবকিছু দেখভাল করছেন। মূলত উনার পরামর্শেই চলছেন খালেদা জিয়া। দল, পরিবার ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও উনার উপর দায়িত্ব দিয়েছেন চিকিৎসার। আজ কোয়ারেন্টাইন শেষ হলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে সেটি আমি এফ এম সিদ্দিকীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সময়ে জানাতে পারব।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আগের চেয়ে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। আর এখন উনার শারীরিক অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে; যেটি গত দুই বছরে করা হয়নি।’