এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার ঘটনা সম্পর্কে যা জানা গেল

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় নিরাপত্তাজনিত কারণে একটি পিকআপ আটকে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তবে পিকআপে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করা যাত্রীরা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিয়ম না জানায় তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে জোর করে চলে গেছেন। এ ঘটনায় কোনো ভাঙচুর বা এমন কিছু হয়নি।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবিসি জানায়, বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, প্রায় ২০ জন আরোহী নিয়ে একটি পিকআপ ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে এক্সপ্রেসওয়ের কুড়িল টোল প্লাজায়। আর্ম ব্যারিয়ার (টিকেট বুথের সামনের প্রতিবন্ধকতা) সরিয়ে নেয়া হচ্ছিল না দেখে কয়েকজন নেমে আসেন পিকআপ থেকে। কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মীদের সাথে কথোপকথনের এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তারা ব্যারিয়ার সরাতে উদ্যত হন। চড়াও হন কর্মীদের ওপর।

এসময় টোল প্লাজার কর্মীরা তাদের কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। এসময় আরো কয়েকজন আরোহী নেমে এসে দায়িত্বরতদের মারধর করেন এবং শাসাতে থাকেন। পরে নিজেরাই আর্ম ব্যারিয়ার জোর করে সরিয়ে পিকআপ নিয়ে উড়াল সড়কে প্রবেশ করেন।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পিকআপের যাত্রীদের এক্সপ্রেসওয়ের নিয়ম-কানুন জানা না থাকায় এবং ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। চলাচলকারী গাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের সুনির্দিষ্ট বিধান আছে।

এক্সপ্রেসওয়ের অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স বিভাগের ম্যানেজার ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) হাসিব হাসান খান বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে যখন কোনো গাড়ি যায় সেই গাড়ির সেফটি দেখা হয়। পিকআপটিতে ১৫ থেকে ২০ জন স্ট্যান্ডিং প্যাসেঞ্জার ছিল। এক্সপ্রেসওয়েতে এই ধরনের গাড়ি অ্যালাউ করা হয় না। কারণ, দ্রুত গতিতে চলাচলের রাস্তায় দাঁড়িয়ে গেলে বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এজন্য এ ধরনের গাড়ি এর আগেও যেতে দেওয়া হতো না।

তিনি আরও জানান, টিকিটের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মীরা ক্যামেরায় পিকআপটিকে দেখার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে এবং গাড়িটিকে যেতে দেয়া হবে কি না সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চায়। এরমধ্যেই অধৈর্য হয়ে পিকআপ থেকে নেমে এসে কয়েকজন জানতে চান, আমরা তো টোল দিবো কেন যেতে দিবেন না? এসময় নিরাপত্তার কারণে যেতে দেয়ার সুযোগ নেই জানানো হলে পিকআপ আরোহীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।

তবে এই ঘটনায় টোলপ্লাজার কর্মীদের কেউ আহত হননি কিংবা কোনো অবকাঠামো বা যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার। বলেন, তারা জোর করে গেছে, নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, এটা ঠিক হয়নি।

এ ঘটনার পর ৯৯৯ এ কল করা হয়। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যান। ‘যেহেতু কোনো দৃশ্যমান ভাঙচুর হয়নি, মামলা করার মতো কোনো উপাদান এখানে নেই,’ বলছিলেন ক্যাপ্টেন (অব.) হাসিব হাসান খান।

পিকআপ আরোহীদের কারও পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি বলেও জানান ক্যাপ্টেন (অব.) হাসিব হাসান খান।