এমপি আনারের হত্যাকাণ্ড মর্মান্তিক, দু:খজনক ও অনভিপ্রেত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গ্রেপ্তার ও তদন্ত চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এমপি আনোয়ারুল আজিম সাহেবের হত্যাকান্ড অত্যন্ত মর্মান্তিক, দু:খজনক ও অনভিপ্রেত। কলকাতায় বাংলাদেশ মিশন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মন্ত্রী জানান, কলকাতার যে ফ্ল্যাটে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কলকাতা পুলিশ সেই ফ্ল্যাটে ঢুকে লাশ পায়নি। তবে হত্যাকান্ডের মূল হোতাসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের মিশনের মাধ্যমে খোঁজখবর রাখছি এবং মিশন থেকেও কলকাতা পুলিশের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এর বেশি কিছু বলা সমীচীন নয়। আমদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আরও যোগাযোগ রাখছে।

বুধবার দুপুরে রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সাংবাদিকরা অতি সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সফরকালে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকরা এ সময় ‘সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে দেওয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন’- এ নিয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ হাছান মাহমুদ সেই মন্তব্য খন্ডন করে বলেন, ‘জেনারেল আজিজকে যুক্তরাষ্ট্রের যে অ্যাক্টে যেভাবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেখানে ব্যক্তিগত দায়ের কথাই বলা হয়েছে, ইনস্টিটিউশনাল বিষয়ে নয়।’

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অভ এনার্জি এবং গ্রিনটেক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সংস্থার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ২৪তম জাতীয় নবায়নযোগ্য শক্তি সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ উচ্চ কার্বন নি:সরণকারী দেশ নয়, বরং আমরা শিল্পপ্রধান দেশগুলোর উচ্চ কার্বন নি:সরণজনিত কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার।

মন্ত্রী জানান, কার্বন নি:সরণ কমানোর কোনো বাধ্যবাধকতা আমাদের না থাকলেও বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পরিবেশ সংরক্ষণের অন্যতম পথিকৃৎ বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনামাফিক আমাদের দেশ ২০৪১ সালের মধ্যে মোট ব্যবহার্য শক্তির ৪০ শতাংশ সবুজ শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে এগিয়ে চলেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের খন্ডকালীন অধ্যাপনায় নিয়োজিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান স্মরণ করিয়ে দেন- অনন্ত মহাবিশ্বের কোটি কোটি গ্রহের মধ্যে এখনও আবিষ্কৃত একমাত্র জীবনতরী আমাদের পৃথিবী গ্রহ। বিপুল মহাবিশ্বে প্রাণের একমাত্র ধারক-বাহক এই পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখতে এর পরিবেশ-প্রকৃতিকে সবুজ-শ্যামল জীবন্ত রাখার কোনো বিকল্পই নেই। আর এ জন্য প্রয়োজন সকল মানুষের সচেতন ভূমিকা।

এ সময় ড. হাছান এ সম্মেলন আয়োজকদের ধন্যবাদ দেন এবং শক্তির নবায়নযোগ্য উৎস যেমন সৌর-শক্তি, বায়ু-শক্তি, পানি-শক্তিসহ যে সব শক্তি উৎপাদনে কার্বন নি:সরণ হয় না, সেই সবুজ শক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে সকলকে উৎসাহিত করতে আহবান জানান ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক মোহাম্মদ আখতার হোসেন, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডিভালপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) মো: আলমগীর মোর্শেদ, বাংলাদেশ সোলার রিনিউয়েবল এনার্জি এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো: নূরুল আকতার এবং সাসটেইনেবল এন্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ডিভালপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মুনিরা সুলতানা বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

গ্রিনটেক ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা খন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত ও নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান যথাক্রমে মূল প্রবন্ধ ও ধন্যবাদ বক্তব্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অভ এনার্জির সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফিস শামস স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।