‘ওরা প্রধানমন্ত্রীর লোক’ বলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা সোমবার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাকে ‘মিথ্যা ও অবমাননাকর’ হিসেবে বর্ণনা করেছে বাংলাদেশ সরকার।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এটিকে লন্ডন ও অন্যান্য জায়গায় সক্রিয় ‘উগ্রপন্থী ও তাদের সহযোগী’দের উসকানিতে ‘বেপরোয়া ও নোংরা অপপ্রচার’ উল্লেখ করে বাংলাদেশ সরকার এটি প্রত্যাখ্যান করছে বলে সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাতে বাসস জানায়, ‘এই প্রতিবেদন একগুচ্ছ বিভ্রান্তিকর শ্লেষ আর বক্রোক্তি ছাড়া আর কিছুই নয়, যা আসলে চরমপন্থী গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু কুখ্যাত ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ‘অপপ্রচার’।
এতে বলা হয়, এরা ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই এ রাষ্ট্রের প্রগতিশীল ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরোধিতা করে আসছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ঢাকা দুঃখিত যে আল-জাজিরা নিজেকে বাংলাদেশে অসামান্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রতির রেকর্ডধারী একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক সরকারকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে তাদের এ হীন রাজনৈতিক চক্রান্তের হাতিয়ারে পরিণত হতে দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আল জাজিরার প্রতিবেদনের অভিযোগসমূহের মূলসূত্র একজন সন্দেহভাজন আন্তর্জাতিক অপরাধী, যাকে আল জাজিরা নিজেই ‘সাইকোপ্যাথ’ আখ্যা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বা বাংলাদেশের রাষ্টীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই বিশেষ ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম প্রমাণও নেই। আর মানসিক ভারসাম্যহীন কারো কথার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছা একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেলের জন্য চরম দায়িত্বহীনতা।’
বিবৃতির বরাতে বাসস এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রতিবেদনের ঐতিহাসিক বিবরণে ১৯৭১ সালের নৃশংস গণহত্যার কথা এমনকি উল্লেখও করা হয়নি। জামায়াতের অপরাধীরা সে সময় লাখ লাখ বেসামরিক বাঙালিকে হত্যা করে এবং ২ লাখের বেশি নারীকে ধর্ষণ করে। এটি প্রতিবেদনের রাজনৈতিক পক্ষপাতের প্রতিফলন।’
আল জাজিরার প্রতিবেদনের প্রধান ভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যানের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে জামায়াতে ইসলামীর মদদপুষ্ট কতিপয় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক অপরাধী এবং কুখ্যাত ব্যক্তি তাদের চিরাচরিত ছকে যে ধরনের বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার চালায় এই রিপোর্টটিও সেই শ্রেণীর। এরা বিভিন্ন উগ্রপন্থী আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ও সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে আল জাজিরার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।’