আর কত ছবি তুলবেন? ছবিতে তো ঘর মেরামত হয় না

দীর্ঘ প্রায় দুই যুগেও সংস্কার হয়নি কালকিনির ছায়াবীথি গুচ্ছগ্রামের ঘরগুলো;মানবেতর জীবনযাপন করছে বাসিন্দারা



রকিবুজ্জামান,মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ

আর কত ছবি তুলবেন? আপনারা আসেন, ছবি তুলেন, আর চলে যান। কই আমাদের ঘর তো মেরামত হয় না।আমরা যে কি কষ্টে আছি,তা শুধু আল্লাহ-ই জানে। একটু বৃষ্টি হলেই মাথায় পলিথিন দিয়ে ঘরে বসে থাকতে হয়।আমাদের কষ্ট বোঝার তো কেউ নাই।’

কথাগুলো মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ছায়াবীথি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের।নির্মানের পর প্রায় দুই যুগ পাড় হয়ে গেলেও একটি বারের জন্যও আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো মেরামত করা হয়নি।ফলে চরম দুর্ভোগ দুর্দশায় দিন কাটছে এখানে বসবাসকারী দরিদ্র পরিবার গুলোর।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাশগাড়ি ইউনিয়নে ২০০২ সালে সেনাবাহিনীর ত্বত্তাবধানে হতদরিদ্রদের জন্য নির্মিত হয় ছায়াবীথি আশ্রয়ণ প্রকল্পটি। দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ধরে কোন সংস্কার না করায় বর্তমানে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে আশ্রায়ন প্রকল্পের প্রতিটি ঘর।ঘরের ছাউনির টিনগুলো মরিচা পড়ে ছিদ্র হয়ে গেছে। সেগুলো বন্ধ করতে পলিথিন বিছিয়ে তার ওপর ইট চাপা দেওয়া হয়েছে।ঘরের কাঠ পঁচে গিয়ে দরজা-জানালাগুলোও ভেঙে গিয়েছে।ঘরের পাশাপাশি টয়লেটগুলোর অবস্থাও খুবই করুণ। সামান্য বৃষ্টি হলেই ভাংগা টিনের চাল দিয়ে ঘরে পানি পড়ে কাপড় চোপড়,শিক্ষার্থীদের বইখাতা সহ সব কিছু ভিজে যায়।এতো সমস্যার পরও এখানে কষ্ট করেই বসবাস করছেন হতদরিদ্র বাসিন্দারা।

প্রকল্পটিতে টিনের তৈরি মোট ২৪টি ব্যারাক রয়েছে।আর প্রতিটি ব্যারাকে রয়েছে দশটি করে ঘরে মোট ২৪০ টি পরিবারের থাকার জায়গা রয়েছে।তবে বর্তমানে ঘরগুলো বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পরায় অনেকেই ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছেন।যারা এখনো রয়েছে তাদের যাওয়ার মতো কোন জায়গা না থাকায় কোনমতে কষ্ট করে এখানে বসবাস করছেন।

আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,এ পর্যন্ত স্থানীয় মেম্বার,চেয়ারম্যান, প্রশাসন এমনকি এমপি মন্ত্রীদের জানিয়েও কোন সুফল পান নি তারা।কেউ আজ পর্যন্ত তাদের দিকে ফিরে তাকায়নি।সরকার যদি তাদের বসবাসের ঘরগুলো মেরামত করার ব্যবস্থা করতো,তবে মাথাগোজার ঠাঁইহীন এসব পরিবারগুলো একটু শান্তিতে থাকতে পারতো।

এদিকে আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরগুলোর করুণ অবস্থার কথা স্বীকার করে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ জানালেন,”প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘদিন সংস্কার না করার ফলে ঘরগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।জরাজীর্ণ এসব ঘরে মানুষ কষ্ট করে বসবাস করছে।ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে দ্রুত এসব ঘর সংস্কারে প্রশাসনের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।”

তবে দীর্ঘদিন যাবৎ নানা কষ্টের মাঝে এসব ভাঙ্গা ঘরে বসবাসকারী আশ্রায়ন প্রকল্পের অসহায় পরিবারগুলো এখন আর শুধু আশ্বাস নয়,চান তাদের দুর্ভোগের অবসান।