আয়নাঘর ও হাওয়া ভবন একসাথে তুলনাযোগ্য নয়: মির্জা ফখরুল

আয়নাঘর ও হাওয়া ভবনকে একসঙ্গে তুলনা করার ঘোর বিরোধিতা করেছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এই ন্যারেশনটা দুঃখজনকভাবে কিছু মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। আমি মনে করি, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করা ও বিএনপির নেতৃত্বকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা থেকে এটি করা হয়।

তিনি বলেন, দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিএনপির ভুল হয়ে থাকতে পারে, তবে এমন কোনো ভুল না যেটি দেশের জন্য ক্ষতিকর। হাওয়া ভবনের সাথে আয়নাঘরের তুলনা হতে পারে না। হাওয়া ভবন ছিল একটি ব্যক্তিগত অফিস। সেটা বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির কোনো ক্ষতি করেনি। সেখানে কাউকে টর্চার করা হয়েছে এমন কথা কেউ বলতে পারবে না। কিন্তু আয়নাঘর আওয়ামী লীগ তৈরি করেছে ভয়াবহ অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের জন্য। সুতরাং আপনারা কেন দুটো বিষয়কে এক করেন আমি বুঝতে পারি না।

দেশের একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন।

বিএনপির সাথে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলার আহ্বান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সৌহার্দ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায় বিএনপি। সেজন্য আমরা সবসময় ওয়েলকাম করি। কিন্তু একইসাথে আমরা যেটা বলতে চাই সেটা হলো জবাবদিহিতা। জনগণের কাছে আমার জবাবদিহিতা। আজকে আওয়ামী লীগকেও একইভাবে জবাবদিহিতা করতে হবে জনগণের কাছে। গত ১৫ বছরে তারা কী করেছে, বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সবকিছু কিভাবে তারা ধ্বংস করেছে, সেটার জবাবদিহিতা তাদের করতে হবে। সেক্ষেত্রে তারা যদি জনগণের কাছে জবাবদিহিতা কমপ্লিট করে রাজনীতি তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নাই।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই, আমাদের দলও সেটা বিশ্বাস করে না। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আগে তারা একদলীয় শাসন করেছে, জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র শুরু করেছেন। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন। সুতরাং গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের যে কমিটমেন্ট সেটি স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত।

জামায়াতে ইসলামীর সাথে বিএনপির জোট বহু আগেই ভেঙে গেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আমাদের কোনো জোট নেই। তবে যুগপৎ আন্দোলনে আমরা আছি।

বিএনপি ক্ষমতায় এলে পররাষ্ট্রনীতি কোন দেশ পন্থী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সব দেশের সাথে বন্ধুত্ব চাই। নির্দিষ্টভাবে কোনো দেশের সাথে বন্ধুত্ব চাই না। আমরা চাই, কোনো দেশ বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দলের সাথে অতিরিক্ত সম্পর্ক না করুক। দেশের মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুক এটা আমরা চাই।