আড়ি পাতার সুযোগ থাকছে স্টারলিংকেও

দেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার উদ্বোধনে নতুন নির্দেশিকা অনুসারে, ‘আইনসম্মত আড়িপাতা’ এবং সরকারের নির্দেশনায় যেকোনো সময় সেবা বন্ধের সুযোগ রাখা হয়েছে। বুধবার এই নির্দেশিকা প্রকাশ করে টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

বর্তমানে, স্টারলিংকসহ স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা চালু করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন যে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবা চালু করা হবে। এর অংশ হিসেবে বিটিআরসি স্যাটেলাইট সার্ভিসের জন্য “রেগুলেটরি অ্যান্ড লাইসেন্সিং গাইডলাইনস ফর নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর ইন বাংলাদেশ” নামক নির্দেশিকা জারি করেছে।

এ নির্দেশিকা অনুসারে, স্যাটেলাইট সেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলো প্রথমে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিতে হবে, তারপর বিটিআরসির কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন ফি পাঁচ লাখ টাকা এবং লাইসেন্স সিকিউরিটি ডিপোজিট আড়াই কোটি টাকা হতে হবে। লাইসেন্স ১০ বছরের জন্য দেওয়া হবে, বার্ষিক ফি নির্ধারিত রয়েছে।

বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, স্যাটেলাইটভিত্তিক ব্রডব্যান্ড ও অন্যান্য সেবা প্রদানকারীদের জন্য বার্ষিক ফি ৩০ হাজার ডলার এবং আইওটি সেবা প্রদানকারীদের জন্য বার্ষিক ফি ১০ হাজার ডলার হবে।

নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে যে, সেবা প্রদানের জন্য লাইসেন্সধারীকে দেশের অন্তত একটি গেটওয়ে দিয়ে সংযুক্ত থাকতে হবে, যা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ফলে সরকারের নির্দেশনায় সেবা বন্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া, নির্দেশিকায় আড়িপাতা বা ‘ল ফুল ইন্টারসেপশন’ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ অনুযায়ী, সিস্টেমে আড়িপাতার সুবিধা থাকা বাধ্যতামূলক, যা নির্দিষ্ট সময়ে আদালতের আদেশ অনুযায়ী ডেটা কপি করা যাবে।

এদিকে, ইন্টারনেট সেবার সাথে যুক্ত আইআইজি কোম্পানিগুলোর লাইসেন্স শর্ত অনুযায়ী, তাদেরকে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। এই নিয়ন্ত্রণের ফলে, ইন্টারনেট সেবা কোন বিশেষ সময়ে বন্ধ করা সম্ভব হতে পারে, তবে স্টারলিংক চাইলে অন্য দেশের গ্রাউন্ড স্টেশন ব্যবহার করে সেবা চালু রাখতে পারে, যদিও এর জন্য অতিরিক্ত খরচ হবে।

বর্তমানে দেশে বিটিআরসির অধীনে ৩৪টি আইআইজি কোম্পানি রয়েছে, যাদের মাধ্যমে এই সেবা প্রদান করা হবে।