রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ বাসভবনের প্রধান ফটকে স্থানীয় কিশোরগ্যাং ও সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন লেখক-নির্মাতা আল নাহিয়ান এবং আরও পাঁচ জন।
বৃহস্পতিবার ৮ জুন শ্যামলীর ৩নং রোডের বিসমিল্লাহ টাওয়ারে সরেজমিনে গেলে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। আল নাহিয়ানের হাতে এবং মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
এ বিষয়ে আল নাহিয়ান প্রিয়দেশ নিউজকে বলেন, আমি শুধু অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি সেজন্যই আমার উপরে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা বলেন, এতে বোঝা যায় সমাজে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য ঘটেই চলবে প্রতিবাদ করলেই হামলার শিকার হতে হবে! সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার বলে স্থানীয়দের দাবি, আর তা না হলে একের পর এক এভাবেই প্রতিবাদ করলেই হামলার শিকার হতে হবে।
জানা যায়, এলাকায় অপকর্ম ও যত্রতত্র অবৈধ কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায়, অতর্কিতে কিশোর গ্যাংয়ের বিশ-পঁচিশ জন সন্ত্রাসী লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। তৎক্ষণাৎ জরুরী সেবাকেন্দ্র ৯৯৯-এ কল করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতিতেই হামলা করে তারা। এতে নাহিয়ান ছাড়াও গুরুতরভাবে আহত হন ভবনের সভাপতি গোলাম রাজ্জাক ও তার দুই পুত্র, নাহিয়ানের মা মাহবুবা বেগম ও ভাই তোহা। উক্ত ঘটনায় ভবনের সভাপতি গোলাম রাজ্জাক বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য শান্ত, সাব্বির, মেহেদী, রকি, হৃদয়, আরিয়ান, সামি সহ আরও অন্তত বিশজন এর সংশ্লিষ্টতার খবর পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, এই গ্রুপের মূল ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারী আল ইমরান সৈকত বিগত কয়েক বছর যাবত শ্যামলী তিন নম্বর সড়কে ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে আসছে। এমনকি নিজ বাসভবনের কমিটিতে জায়গা পাওয়াকে কেন্দ্র করে ইতোপূর্বে একাধিকবার বহিরাগত দুষ্কৃতিকারীদের নিয়ে মহড়া দেওয়া এবং এপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের সাথে অকথ্য ভাষায় হুমকি-হামলার ভীতি প্রদর্শন করা তার নিয়মিত আচরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দায়েরকৃত মামলায় ৪ জুন দিবাগত রাতেই গ্রেফতার হয় সৈকত। ৬ তারিখে সে জামিনে মুক্ত হয়ে প্রায় শতাধিক লোকের বাহিনী নিয়ে এলাকায় শোডাউন চালায়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আল নাহিয়ান এবং স্থানীয় বাসিন্দারা জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০১৮ সালে অভিযুক্ত সৈকত বরিশালের পুলিশ কমিশনারকে প্রকাশ্য দিবালোকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে এবং অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে জানা গেছে।