রাশিয়ার যেমন ইউক্রেন নিয়ে মাথাব্যথা, ঠিক তেমনই চীনের মাথাব্যথা হচ্ছে তাইওয়ান। অবশ্য রাশিয়া শুরুতে ইউক্রেনকে নিজেদের অংশ দাবি না করলেও সেক্ষেত্রে চীন এগিয়ে রয়েছে। তাইওয়ান যদিও স্বাধীনভাবে শাসিত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তবুও চীন তাদেরকে নিজেদের অংশ বলে মনে করে। চীনা বলয় খর্ব করতে তাইওয়ান বেশিরভাগ সময়ই যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে থাকে।
সম্প্রতি ঠিক তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছে। তাইওয়ানের রাষ্ট্রপতি সাই ইঙ-ওয়েন যুক্তরাষ্ট্রে ১০ দিনের সফর করেছেন। এসময় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ইউএস হাউস স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সাথে দেখা করার পর আগ্রাসী হয় চীন। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীন তাইওয়ানের চারদিকে সামরিক মহড়া শুরু করে।
সিএনএন জানিয়েছে, চীনা সামরিক বাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড শনিবার এই মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে। বহিরাগত শক্তির সাথে তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির যোগাযোগের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ একটি গুরুতর সতর্কতা এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে দাবি চীনের।
তবে চীনের এমন ঘোষণার পরপরই তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা তাইওয়ান প্রণালীতে বহুসংখ্যক চীনা যুদ্ধবিমান শনাক্ত করেছে। বেশ কয়েকটি চীনা যুদ্ধবিমান ইতিমধ্যেই তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলে প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। এছাড়াও একাধিক পিএলএ জাহাজ তাদের প্রণালীতে দেখা গেছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে তারা।
তাইওয়ান বলছে, রোববার কয়েক ডজন চীনা জেট বিমান তাইওয়ান প্রণালীর চারপাশে উড়েছে। এছাড়াও ৯টি জাহাজও দেখা গেছে বলে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। তাইওয়ানের কর্মকর্তারা এই অভিযানে ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে তাইওয়ানের রাষ্ট্রপতির দেশে ফেরার পরপরই চীনা সামরিক মহড়ার কবলে পড়ার বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া না দেখানোর জন্য চীনকে অনুরোধ করেছেন। এছাড়াও ‘সংযম এবং স্থিতাবস্থার (শান্তির) কোনো পরিবর্তন না করার’ আহ্বান জানান।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘বেইজিংয়ের পদক্ষেপগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে’। এছাড়াও ‘এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জোর দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ এবং সক্ষমতা রয়েছে’।