জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কের জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান।
বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে চার ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর ১৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা ৪২ মিনিটে (নিউইয়র্ক সময়) নিউইয়র্কের জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে, বাংলাদেশ সময় রোববার সকাল ১০টা ১২ মিনিটে ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার ১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে ইউএনআইডিও ও ডেলয়েট দ্বারা আয়োজিত ‘খাদ্যের জন্য চিন্তা- খাদ্য সরবরাহ চেইন উদ্ভাবনের জন্য এসডিজিকে ত্বরান্বিত করার জন্য সহযোগিতা’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনে মূল বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিনে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে ‘এসডিজি সামিট-লিডার্স’ ডায়ালগ ৪ (এসডিজি অর্জনের জন্য সমন্বিত নীতি ও পাবলিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা) শীর্ষক আরেকটি সম্মেলনেও ভাষণ দেবেন তিনি।
১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দফতরের সাধারণ পরিষদ হলে ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের উচ্চ পর্যারের প্রথম দিনের বিতর্কে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত নৈশভোজেও অংশ নেবেন তিনি। ২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় দুপুরে ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা।
এদিন প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সদর দফতরের সিআর-১৬-এ স্পেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর সভাপতি কর্তৃক ‘টুওয়ার্ডস এ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকেও ভাষণ দেবেন।
একই দিন জাতিসংঘ সদর দফতরে সিআর-১১ এ বাংলাদেশ, অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা, ভুটান, চীন, মালয়েশিয়া, চ্যাথাম হাউস এবং সুচনা ফাউন্ডেশনের সহ-আয়োজিত চিকিৎসা পরিষেবা ভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি উচ্চ-পর্যায়ের সাইড ইভেন্টেও যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য আন্তর্জাতিক পাবলিক ফাইন্যান্সিং বৃদ্ধি এবং দক্ষতা নিশ্চিতকরণ’ শিরোনামে উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন (এফএফডি) বিষয়ে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বিতর্কে ভাষণ দেবেন। একই দিনে তিনি মহাসচিবের ক্লাইমেট অ্যামবিশন সামিট, যোগ দেবেন, মহামারী প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, নারী নেতাদের ইউএনজিএ প্লাটফর্মের বার্ষিক সভা, ক্লাইমেট অ্যামবিশন উচ্চস্তরের জলবায়ু উচ্চ-স্তরের বিষয় ভিত্তিক সম্মেলনের পাশাপাশি ন্যাশনাল জুরিসডিকশনের বাইরের এলাকার সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য আইনের উপর জাতিসংঘের কনভেনশনে যোগ দেবেন।
২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের সাইড ইভেন্টে যোগদানের পাশাপাশি ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সৃষ্ট হুমকি মোকাবেলা’ শীর্ষক ব্রেকফাস্ট সামিটে এবং ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরে জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার, জাতিসংঘ মহাসচিবের জেনোসাইড উপদেষ্টা, নবনির্বাচিত ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) মহাপরিচালক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে জাতিসংঘ সদর দফতরের দ্বিপাক্ষিক বুথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন। সেখানে ২৯ সেপ্টেম্বর থাকবেন। তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করবেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।
প্রধানমন্ত্রী ৩ অক্টোবর রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (লন্ডন সময়) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ৪ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।