বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো আলাপ নেই। আলোচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিষয় এলে দল হিসেবে আমরা বিবেচনা করব।’
বুধবার (২৯ মার্চ) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য বিএনপিকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের চিঠির বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিএনপি সুযোগ নেবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সুযোগ কেন নেব, কার কাছ থেকে নেব? নির্বাচন কমিশন? যার কোনো ক্ষমতা নেই। চলমান সংকট রাজনৈতিক, এই সংকট নিরসনে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘সংকট সমাধানের উদ্যোগ সরকারকে নিতে হবে, তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিষয় ছাড়া এই সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনার সিদ্ধান্ত নেই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল অত্যন্ত ভদ্রলোক, তার আবেদনও ভেরি গুড। কিন্তু বাস্তবতা আমরা জানি, তাঁর কোনো ক্ষমতা নেই। অহেতুক আলাপ করে কী হবে?’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন নতুন নয়, পুরোনো। পরিকল্পিতভাবেই জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলো ভাগ করা হয়েছে। বিপদগ্রস্ত হচ্ছে সাংবাদিক সমাজ। এর মধ্যে কিছু সাংবাদিক আছেন, যাদেরকে সুবিধা দিয়ে সরকার তাদের পক্ষে নিচ্ছে। আমাদের কথা তো এক সেকেন্ড দেখানোর সুযোগ হয় না। যারা কথা বলতে পারেন, তাদেরকে টকশোতে ডাকা হয় না—এটাই বাস্তবতা। এই সরকারের একটাই লক্ষ্য, সেটি হচ্ছে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছি। ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে একবার নয়, দুই দফায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেছিলেন—নির্বাচনে ভোট কারচুপি হবে না, ছলচাতুরি হবে না, প্রশাসন থাকবে নিরপেক্ষ; কিন্তু বাস্তবে আমরা কী দেখেছি? তাদের কথা বিএনপি বিশ্বাস করে না। বিএনপি বিশ্বাস করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং নির্বাচনের মাধ্যমেই রাষ্ট্র পরিচালনায় যাওয়া।’
সংবাদ সম্মেলনে দৈনিক প্রথম আলোর সাভার প্রতিনিধি শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান মির্জা ফখরুল।