নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে সরকারি চাল অন্য কোম্পানির বস্তায় ভরে পাচারের অভিযোগে যৌথবাহিনীর পর এবার সেখানে অভিযান পরিচালনা করেছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। এসময় মেসার্স খাজা ভাণ্ডারকে দেড় লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়।
এর আগে গত বুধবার দিবাগত রাতে সরকারি চাল অন্য কোম্পানির বস্তায় ভরে বিক্রি ও পাচার করার উদ্দেশ্যে ৬ গাড়ি চাল আসার খবরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল অভিযানে গেলেও অদৃশ্য কারণে অভিযান পরিচালনা না করে কাগজপত্র নিয়ে চলে আসার খবর প্রকাশ করেছিল প্রিয়দেশ নিউজ। পাহাড়তলী জোনের এসি বিষয়টি জানেন না বলে অস্বীকার করলেও খাজা ভাণ্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী সাহাব উদ্দিন এসির কাছে কাগজপত্র দেওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন। সেই বিষয়ে প্রিয়দেশ নিউজে ‘চট্টগ্রামে সরকারি চাল কোম্পানির বস্তায় ভরে পাচার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর অবশেষে ওই রাতেই যৌথবাহিনী খাজা ভাণ্ডারে অভিযান পরিচালনা করে।
সেই অভিযানে ৩০ টন সরকারি চাল পাচারের উদ্দেশ্যে অন্য বস্তায় ভরার সময় জব্দ করা হয়।
যৌথবাহিনীর অভিযানের পর খাজা ভাণ্ডারে অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। সেসময় অন্য কোম্পানির অগণিত বস্তা পাওয়া যায় খাজা ভাণ্ডারে। সরকারি চাল অন্য কোম্পানির বস্তায় ভরে বিক্রি করায় মেসার্স খাজা ভাণ্ডারকে এসময় দেড় লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়।
মেসার্স খাজা ভাণ্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী সাহাব উদ্দিন এ বিষয়ে প্রিয়দেশ নিউজকে বলেন, যৌথবাহিনী অভিযানে এলে আমি কাগজপত্র দিয়েছি। তারা সেগুলো দেখেছে। যাচাই-বাছাই করেছে। এরপর ভোক্তা অধিকার এসে অভিযান চালায়। অন্য কোম্পানির বস্তা দেখায় তারা জরিমানা করেছে। আমাদের নামে বস্তা করার জন্য বলেছে। আমি তাদের সেই পরামর্শ অনুযায়ী এখন থেকে ব্যবসা করব।
অন্যদিকে মেসার্স খাজা ভাণ্ডারের ম্যানেজার ও স্বত্ত্বাধিকারী সাহাব উদ্দিনের বিশ্বস্ত সহযোগী জাবেদকে বুধবার রাতে চাল পাচারের অভিযোগে আটক করে নিয়ে গিয়েছিল যৌথবাহিনী। জাবেদ এ বিষয়ে বলেন, কাগজপত্র দেখার জন্য আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যৌথবাহিনী কাগজপত্র চেক করে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। পরে ভোক্তা অধিদপ্তর এসে অভিযান পরিচালনা করে মেসার্স খাজা ভাণ্ডারকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করে।
প্রসঙ্গত, সরেজমিনে জানা যায়, প্রতিনিয়ত রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে কম দামে চোরাইভাবে চাল ক্রয় করেন সাহাব উদ্দিন। সেই চাল অন্য কোম্পানির বস্তায় ভরে চড়া দামে বাজারে বিক্রি ও পাচার করে থাকেন। এর মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সাহাব উদ্দিন।
স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রামে চালের কোনো সংকট না থাকলেও অসাধু আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে চালের বাজার অস্থির করে যাচ্ছেন। এর উপর সরকারি চাল অন্য কোম্পানির বস্তায় ভরে চড়া দামে বিক্রি করা জনসাধারণের সাথে প্রতারণা। প্রশাসন এভাবে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখলে চালের বাজারের অস্থিরতা কমবে। তবে চাল পাচারকারী খাজা ভাণ্ডারের মালিক সাহাব উদ্দিনসহ পুরো সিন্ডিকেটকে আটক করে আইনের আওতায় না আনলে বাজার পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে না।
পর্ব-৪: চট্টগ্রামে সরকারি চাল পাচার সিন্ডিকেটের হোতা সাহাব উদ্দিন
পর্ব-৫: সরকারি চাল পাচার চক্রের হোতা সাহাব উদ্দিন কি অধরাই থেকে যাবে?
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত