মনপুরায় মোটরসাইকেল চুরি করল বিএনপির সাবেক সেক্রেটারির ছেলে আফফান

মনপুরা প্রতিনিধি: ভোলার মনপুরায় বিআরডিবি কর্মকর্তা মাহতাব অপুর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি গত ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে তার বাসা থেকে চুরি হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মান্নান হাওলাদারের ছোট ছেলে আফফান হাওলাদারসহ চোর চক্র মোটরসাইকেলটি চুরি করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় চোর চক্র শনাক্ত হওয়ার পর মান্নান হাওলাদার মোটরসাইকেলটি মনপুরা থানায় পৌঁছে দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিও রেকর্ডের মাধ্যমে জানা যায়, এসআই রাসেলের নেতৃত্বে পুলিশ তজুমুদ্দিনে মোটরসাইকেলটি উদ্ধারে গেলে মান্নান হাওলাদার তাকে বাধা দিয়ে বলেন, আপনি আপাতত ফিরে যান আমি দায়িত্ব নিয়ে মোটরসাইকেলটি পৌঁছে দেওয়া ব্যাবস্থা করছি। সেসময় ফিরোজ নামের একজন মান্নান হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলে জানান, আফফানকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে, যাতে মোটরসাইকেলটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তখন এসআই রাসেল মান্নান হাওলাদারকে সেই টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করতে বললে তিনি সম্মত হন। ফিরোজ চোর চক্রের সদস্য। তাকে সাথে নিয়ে পুলিশ অভিযানটি পরিচালনা করে মোটরসাইকেল উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত সে থানা হাজতে আটক ছিল। পরদিন মোটরসাইকেলটি মনপুরা থানায় পৌঁছে দেয় মান্নান হাওলাদার।

এই ঘটনায় মনপুরা থানার ওসি কারও বিরুদ্ধে মামলা না নিয়ে উল্টো মোটরসাইকেলটি হাতে পাওয়ার পর আটক ফিরোজকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মনপুরা উপজেলায় আব্দুল মান্নান হাওলাদারের পরিবার গড়ে তুলেছে এক বিস্তৃত অপরাধের সাম্রাজ্য। কেন্দ্রীয় যুবদলের একজন শীর্ষ নেতার আশ্রয়ে অপরাধে সাম্রাজ্য পরিচালনা করছে। বিএনপির ক্ষমতাকালীন সময়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আব্দুল মান্নান হাওলাদার ও তার পরিবারের সদস্যরা এলাকায় একের পর এক অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই থেকে শুরু করে স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। বিগত ১৭ বছর ধরে তার মেয়ের জামাই জাকির হোসেন (যিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক যুবলীগ সভাপতি) তাদের এই অপকর্মে সক্রিয় সহায়তা করেছেন। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় যুবদলের একজন শীর্ষ নেতার আশীর্বাদ পেয়ে এই পরিবার আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে বলে জানা যায়।

স্থানীয়রা জানান, মান্নানের ছোট ভাই হোসেন হাওলাদার যিনি (উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব) স্থানীয় আওয়ামী ঠিকাদারদের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন এবং মান্নান হাওলাদারের জামাতা জাকির হোসেন ও তার ভাইদের মৎস্য ব্যবসা ও ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করেন। বড় ছেলে তানভীর হাওলাদার একজন মাদকসেবি ও ডিলার হিসেবে পরিচিত। ছোট ছেলে আফফান হাওলাদার মাদক, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিতে জড়িত। আফফান মনপুরায় মোটরসাইকেল ছিনতাই সিন্ডিকেটের ও মূল হোতা।