ডা. মুরাদ কি এমপি পদও হারাচ্ছেন?

119

নারীদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করে বেশ বিপাকে রয়েছেন সদ্য পদত্যাগী তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগের পর এবার তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ। সেখানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

একইসাথে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশও কেন্দ্রে পাঠিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি শেষ পর্যন্ত এমপি পদও হারাচ্ছেন ডা. মুরাদ হাসান?

এ প্রশ্ন অবশ্য তার পদত্যাগের পর থেকেই ছিল। তিনি যে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সেই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হাছান মাহমুদ সচিবালয়ে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, সংসদ সদস্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। একজন সংসদ সদস্যকে তো চাইলেই যে কেউ বাদ দিতে পারে না।

তবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এ বক্তব্য ছিল জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কারের সুপারিশ পাঠানোর আগের।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একজন নেতা বলছেন, এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। ডা. মুরাদ হাসানকে নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এটা আমরা কল্পনাও করিনি। এরপরও তিনি যদি দল থেকে বহিষ্কার হন, তাহলে তো এমনিতেই তার সংসদ সদস্য পদ শূন্য হয়ে যাবে। কেননা তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত ছিলেন। এখন সেই আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হলে তিনি আর এমপি থাকবেন না।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের আরেকজন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতা জানিয়েছেন ভিন্নমত। তিনি বলেন, ডা. মুরাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যের কারণে তিনি প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। সেই হিসেবে তো তিনি সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়ে গেছেন। তাকে বহিষ্কারের সুপারিশ এসেছে। আগে বহিষ্কার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হোক। এরপর বুঝা যাবে তার এমপি পদ থাকবে কি থাকবে না।

ডা. মুরাদ কি অসুস্থ?
তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগের পর ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তার সুস্থতা কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রী পরিষদে পৌঁছেছে। আমি তার সুস্থতা এবং মঙ্গল কামনা করি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে তার মধ্যে আমি কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। তার কিছু বক্তব্য ও ঘটনা সরকার এবং দলকে বিব্রত করেছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করার জন্য বলেছেন। সে অনুযায়ী তার স্বাক্ষরিত পদত্যাগপত্র জনসংযোগ কর্মকর্তা ইতোমধ্যে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে নিয়ে গেছেন।’

কী ধরনের পরিবর্তন দেখা গেছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, তিনি আগে যেরকম ছিলেন, গত তিনমাস ধরে (তার) একটু পরিবর্তন মনে হচ্ছিল। বিভিন্ন ঘটনা এবং কর্মকাণ্ডে সেটা মনে হয়েছিল। তিনি বেশ কিছু বক্তব্য দিয়েছেন, সেগুলো দলের সঙ্গে বা সরকারের অভ্যন্তরে আলোচনা না করেই বলেছেন।’