৫ আগস্ট গণহত্যাকারী স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের আগেই দলের হাইকমান্ড বিষয়টি কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারে। এরমধ্যেই পরিস্থিতি অনুকূলে নয় বুঝতে পেরে গা ঢাকা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দলের ১নং যুগ্ম সম্পাদক ও তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার গ্রিন সিগন্যাল পান। সেই আশায় শেষ পর্যন্ত তিনি পালিয়ে থাকলেও দেশত্যাগ করেননি।
সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখনই ওবায়দুল কাদেরের মন্ত্রণালয়ের অধীন সেতু ভবনে একাধিকবার আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া বিআরটিএ সহ তার মন্ত্রণালয়ের একাধিক জায়গা আগুনে জ্বলেছিল। এতেই অনেকটা ঘাবড়ে যান ওবায়দুল কাদের। আন্দোলন উস্কে দেওয়া এবং দলের ব্যর্থতার কারণে সর্বশেষ দলীয় ফোরামে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে ভুয়া ভুয়া বলে কার্যালয় থেকে একপ্রকার তাড়িয়ে দেন। এতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে তার অব্যাহতি নির্ধারণ হয়ে যায়। তিনিও হয়ে পড়েন নিষ্ক্রিয়।
৪ আগস্ট দেশজুড়ে যখন আওয়ামী লীগের অফিসগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, জেলায় জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল- তখনই তার পদে শেষ পেরেক মারা হয়ে যায়। সেদিন তিনি কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেননি। এরমধ্যেই গুঞ্জন উঠেছিল ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনি দেশ ছেড়েছেন। এতে স্বাভাবিকভাবেই ১নং যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যেও আশার আলো দেখতে পান হাছান মাহমুদ। কারণ, ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক না থাকলে পদাধিকার বলেই তিনি সাধারণ সম্পাদক পদের প্রথম দাবিদার। এজন্য পরিবার-পরিজনকে বিদেশে পাঠিয়ে দিলেও তিনি দেশ ছেড়ে যাননি বলে সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে গত ৬ আগস্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদকে বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে। দেশ ছেড়ে যেতে চাইলে তাকে আটকে দেওয়া হয়। পরে তিনি প্রতিবেশী ভারত সীমান্তের একটি স্থলবন্দর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই আড়ালে ছিলেন সাবেক এই মন্ত্রী। একপর্যায়ে সীমান্ত দিয়ে পালাতে গিয়ে আটক হন।