সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার মানে প্রশাসন ফেল: মির্জা ফখরুল

আনিসুর রহমান মিঠু
সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ায় নতুন সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শৃঙ্খলা ফেরাতে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তার মানে প্রশাসন ফেল করছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে সেনাবাহিনীকে পাওয়ার দেওয়া হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার আমি মনে করি সেসব এলাকাতে দেওয়া দরকার যেসব এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু যেসব এলাকায় শৃঙ্খলা আছে, শান্তিপূর্ণ আছে, যেখানে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা সমস্ত বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছেন সেখানে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে আবার নতুন সমস্যা তৈরি করা সমচীন হবে না।

বৃহস্প‌তিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লা‌বে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ও নিহতের প‌রিবা‌রের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির মহাসচিব। এসময় তিনি দলের পক্ষ থেকে আহত ও নিহত‌দের প‌রিবার‌কে আর্থিক সহযোগিতা দেন।

সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান এবং আমি অনুরোধ করব এ অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি যে‌ন পুনর্বিচেনা করেন। কখনও এমন কোন ব্যবস্থা নিবেন না যাতে সামগ্রিকভাবে তাদের জন্য বুমেরাং হবে এবং দেশের মানুষের জন্য এটি বুমেরাং হয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা আশা করি সঠিকভাবে বিষয়গুলো উপলব্ধি করে সিদ্ধান্ত নিবেন। এ কথাটি স্পষ্ট করে বলছি কারণ এটি বলা আমার দায়িত্ব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটানোর পর আমরা সবাই অত্যন্ত আশাবাদী হয়ে আছি নতুন এই অন্তর্বর্তী সরকার সব জঞ্জাল দূর করে দেশে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবে যে, সুষ্ঠু পরিবেশে সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের একটা পার্লামেন্ট তৈরি হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা প্রায় ১৬ বছর ধরে আন্দোলন করছি। এ সময়ে আমাদের প্রায় সাতশ মানুষকে আয়নাঘরে গুম করে রাখা হয়েছে। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে ১১১ টি মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ মানুষ যিনি কৃষক, যিনি কখনো আদালত কী দেখেননি তাদেরকে নিয়মিত আদালতে যেতে হয়, জেলে যেতে হয়। কত ব্যবসায়ী তার ব্যবসা হারিয়েছে, চাকরি হারিয়েছে, এমনকি এ জেলায় ৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে।

এসময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলী, দপ্তর সম্পাদক মামুনুর র‌শিদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদসহ দলটির ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।