ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড উপকূল, নিহত ৫

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে উপকূলীয় অঞ্চল বলতে গেলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে দ্বীপজেলা ভোলায়ও। জেলার লালমোহন ও চরফ্যাশনে ঘূর্ণিঝড়ে ২০-২৫টি বাড়ি তছনছ হয়ে গেছে। এতে আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ জন।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে পটুয়াখালীতে ২ জন, বরগুনার আশ্রয়কেন্দ্রে ১ জন এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ২ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার রাতে বুলবুল উপকূলীয় এলাকা অতিক্রমের সময় ঝড়ো হাওয়ায় তারা নিহত হন। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ২০ লাখেরও বেশি মানুষ। রোববার সকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তারা ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন।

এছাড়া বরগুনায় ৬৪ মাঝি-মাল্লাসহ ৭টি মাছধরার ট্রলার নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ায় সমুদ্র বন্দরগুলোতে মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এর অংশ হিসেবে মোংলা ও পায়রায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত, আর চট্টগ্রাম বন্দরের ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত বহাল করেছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ‌‘চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলাসমূহের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এসব অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া ও দমকা বাতাস বইতে পারে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে আগামী ২ দিন বৈরি আবহাওয়া থাকতে পারে। সেই সাথে রয়েছে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা।’

আবহাওয়া অফিস বলছে, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হযেছে। আর বাতাস হয়েছে ঘণ্টায় ৮১ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ বাতাসের রেকর্ড করা হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১১৭ কিলোমিটার। এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে প্রতি ঘণ্টায় ১৩১ মিলিমিটার।’

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ ছিল। রোববার সকাল ৭টা থেকে এই বিমানবন্দর চালু ও স্বাভাবিক ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ফ্লাইট অপারেশনের জন্য রোববার সকাল থেকে কক্সবাজার এবং বরিশাল বিমানবন্দর খুলে দেয়া হয়েছে।

তবে সারা দেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল এখনও বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সাগর উত্তাল থাকায় সেন্টমার্টিনে আটকা পড়েছেন ১২শ’ পর্যটক।